শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মোতালেব হোসেন এবং মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী নাসিরউদ্দিনকে ঘুষ ও দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত রবিবার গ্রেফতার দেখানো হলেও এর আগে দুই দিন ধরে তারা নিখোঁজ ছিলেন। নাসিরউদ্দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চমান সহকারী বা পিয়ন পদে চাকরি করা সত্ত্বেও থাকেন খিলক্ষেতের কনকর্ড লেক সিটির ফ্ল্যাটে। ইতিপূর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে কর্মরত ছিলেন তিনি। সে সময় তার বিরুদ্ধে এমপিওভুক্তিসহ নানা বিষয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। অথচ এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেষণে নেওয়া হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছে পাওয়া যায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মোতালেব হোসেনও ঘুষ-দুর্নীতির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচিত নাম। গত শনিবার রাজধানীর বছিলায় নিজের নির্মাণাধীন ছয় তলা বাড়ির তদারকি করতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আলাদিনের চেরাগসম চাকরির বদৌলতে এই কর্মকর্তা বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। নাগরিকদের এ মৌলিক অধিকার পূরণে স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে এর সুফল অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক বড় অংশ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় সরকারের সুনামও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। আমরা আশা করব শিক্ষা খাতে সরকার যে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে তার সুফল যাতে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যয়িত হয় তা নিশ্চিত করতে এই মন্ত্রণালয়ের ঘুষ-দুর্নীতির হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানা হবে। যাদের কারণে মন্ত্রণালয়ের সুনাম জিম্মি হয়ে পড়ছে তাদের চিহ্নিত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোন আলাদিনের চেরাগের বদৌলতে রাতারাতি বাড়ি-গাড়ির মালিক হচ্ছেন, ব্যাংক ব্যালান্স গড়ে তুলেছেন তা তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা অপরিহার্য। প্রশ্নফাঁস ও ঘাটে ঘাটে দুর্নীতির যে বদনাম গড়ে উঠেছে, এই মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট দফতর-অধিদফতরগুলোকে নিয়ে তার অবসানে কঠোর নজরদারির কোনো বিকল্প নেই।