বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ চুরি রোধে আইন

কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সততাও কাম্য

বিদ্যুৎ চুরি রোধে ২৬ বছর আগে প্রণীত আইনের সংশোধনী এনে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ডের পরিসর বাড়িয়ে বিদ্যুৎ আইন ২০১৭ নামের নতুন আইন পাস করা হয়েছে সংসদে। আশা করা হচ্ছে কড়া শাস্তি সংবলিত এ আইন বিদ্যুৎ চোরদের সামাল দিতে অবদান রাখবে। জাতীয় গ্রিডলাইনে বিতরণকৃত বিদ্যুতের এক উল্লেখযোগ্য অংশই চুরি হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশেই চলে চুরির ঘটনা। এ চুরিকে সিস্টেম লস দেখিয়ে তার দায় চাপানো হয় সাধারণ গ্রাহকদের ওপর। ব্যবহৃত বিদ্যুতের পাশাপাশি চুরিকৃত বিদ্যুতের দামও তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। বাংলাদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হয়। বিদ্যুৎ চুরির শতকরা নব্বই শতাংশ ঘটনার সঙ্গে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পর্ক রয়েছে। এ চুরি বন্ধে জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ চোরদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করে গত মঙ্গলবার বিদ্যুৎ আইন ২০১৭ শীর্ষক বিল পাস করা হয়েছে। এতে বাসাবাড়ির জন্য বিদ্যুৎ চুরি করলে তিন বছর এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ চুরি করলে পাঁচ বছর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই, কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবসমূহ কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলের অপরাধ ও দণ্ড অধ্যায়ে বলা হয়েছে, কোনো বাসাবাড়িতে বা অন্য কোনো স্থানে ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ চুরি করলে তিন বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পাসকৃত বিলে শিল্প ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ চুরি করলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করার জন্য দি ইলেকট্রিসিটি অ্যাক্ট-১৯১০ রহিত করে তা সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে নতুন আইন আকারে বাংলা ভাষায় বিদ্যুৎ আইন-২০১৭ শীর্ষক বিলটি প্রণীত হয়েছে। বিদ্যুৎ চুরি বন্ধে পাসকৃত বিলটির উদ্দেশ্য ‘মহান’ হলেও এর সুফল নির্ভর করছে বিদ্যুৎ বিতরণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততার ওপর। এ ক্ষেত্রে যে সংকট রয়েছে তা রোধ করা গেলে অন্তত ৯০ শতাংশ চুরি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর