সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

এ টালবাহানা অপ্রত্যাশিত

জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিন

রাজধানী কুড়িলের ৩০০ ফুট রাস্তার উভয় পাশে ১০০ ফুট চওড়া খাল খননের নামে হুকুমদখল করা জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখার ঘটনা এলাকাবাসীর মনে হতাশা সৃষ্টি করছে। হুকুমদখলকৃত জায়গা থেকে বাড়িঘর, স্থাপনা সব ভেঙে বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হলেও তাদের দখলকৃত জমির ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো দেওয়া হয়নি। ১০০ ফুট খাল খনন প্রকল্প কবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা। স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে জেলা প্রশাসন পর্যন্ত বিভিন্ন দফতরে মাসের পর মাস ধরনা দিয়েও ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্মর্তব্য, পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফুট রাস্তার উভয় পাশে খাল খননসহ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প নেয় সরকার। প্রকল্প এলাকা থেকে এরই মধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে বাড়িঘর ও দোকানপাট। বুলডোজার ব্যবহার করে বিভিন্ন বাড়িঘরের অর্ধাংশ ভেঙে ফেলায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দৃশ্যপটের সৃষ্টি হয়েছে। খাল প্রকল্পের জন্য ৯০ একর ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। অধিগ্রহণের কাজ বেশ আগেই শেষ হয়েছে এবং প্রতি শতক জমির দাম ধরা হয়েছে ৪৮ লাখ টাকার বেশি। ক্ষতিপূরণের এই হার জমির বর্তমান বাজার দরের অনেক কম। অথচ সে ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে টালবাহানা চলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মনে জ্বলছে তুষের আগুন। তাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জটিলতা সৃষ্টি করে ঘুষ উেকাচ আদায়ের মহোৎসব শুরু করেছে। চাহিদামাফিক টাকা দেওয়া না হলেই নামে-বেনামে, ভিত্তিহীন ওয়ারিশান সাজিয়ে দরখাস্ত প্রস্তুত করা হয়। সে দরখাস্তের অজুহাতেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণের মূল্য প্রদানের ক্ষেত্রেও পদে পদে ক্ষতিগ্রস্তদের ঠকানো হয়েছে। ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে জায়গা-জমির বর্তমান বাজারমূল্য বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এমনকি জায়গার দাম নির্ধারণে হাই কোর্টের দেওয়া নির্দেশকেও পাত্তা দেওয়া হয়নি। জমির যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা প্রকৃত দামের ২৫ শতাংশের মতো। সে অর্থ প্রদানে নানা ধরনের টালবাহানার আশ্রয় গ্রহণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণ অপ্রত্যাশিত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা আশা করব, এলাকাবাসীর ক্ষোভ নিরসনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে টালবাহানা চলছে তার অবসান ঘটানো হবে।  প্রকল্প বাস্তবায়নে অনীহা থাকলে অধিদখলকৃত জমি মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়াই হবে বিধেয়।

 

সর্বশেষ খবর