বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
চিঠিপত্র

কাশ্মীর

কাশ্মীরের অধিবাসীরা প্রধানত মুসলিম। কিন্তু ১৩৪৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তারা হিন্দু রাজাদের দ্বারা শাসিত হতো। ১৩৪৯ খ্রিস্টাব্দে শাহ মির্জা ‘শামসউদ্দিন শাহ’ উপাধি ধারণ করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার কয়েকজন পুত্র প্রায় ৪৫ বছর ধরে পরপর রাজত্ব করেন। কাশ্মীরের শাসকদের মধ্যে জয়নুল আবেদিন ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। তার রাজত্বকালে প্রজারা সুখ ও সমৃদ্ধিতে বাস করত। প্রজাদের মঙ্গলের জন্য তিনি সর্বপ্রকার চেষ্টা করতেন। তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করেন ও প্রজাদের করভার লাঘব করেন। পূর্ববর্তীদের রাজত্বকালে মুদ্রামানের যে অবনিত ঘটেছিল, তিনি তার প্রতিকার করেন। তিনি উদারনীতির পরিপোষক ছিলেন। অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তার সহিষ্ণুতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল। সিকান্দার শাহের আমলে যেসব হিন্দু রাজ্য ত্যাগ করে গিয়েছিল তিনি তাদের ফিরিয়ে আনেন এবং রাজ্যে সর্বপ্রকার সুবিধা ভোগ করার সুযোগ দান করেন। তিনি জিজিয়া কর উঠিয়ে দিয়েছিলেন এবং পূর্ববর্তীদের রাজত্বকালে যেসব মন্দির বিধ্বস্ত হয়েছিল তা পুনর্নির্মাণ করার জন্য হিন্দুদের আদেশ দেন। ফারসি, হিন্দি ও তিব্বতি ভাষায় তিনি পণ্ডিত ছিলেন এবং শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। ‘মহাভারত’ ও ‘রাজতরঙ্গিনী’ তার সময়ে ফারসি ভাষায় অনূদিত হয় এবং অনেক আরবি ও ফারসি ভাষার গ্রন্থ হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। এসব গুণ বিবেচনা করে তাকে কাশ্মীরের আকবর বললে অত্যুক্তি হয় না। জয়নুল আবেদিনের দুর্বল উত্তরাধিকারীদের আমলে কাশ্মীরে ভীষণ অরাজকতা দেখা দেয়। ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগে হায়দার মির্জা নামে হুমায়ুনের একজন আত্মীয় কাশ্মীর অধিকার করেন।  কিন্তু ১৫৬১ খ্রিস্টাব্দে চক্ক বংশ কর্তৃক মির্জা বংশের পতন ঘটে। ১৫৮৬ খ্রিস্টাব্দে কাশ্মীর অধিকার করে সম্রাট আকবর তা সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর