প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইতালির রাজধানী রোমে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ)-এর ৪১তম পরিচালনা পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান সময়ের বিবেচনায় তাৎপর্যের দাবিদার। দারিদ্র্য ও ক্ষুধা বিশ্বজুড়ে এক বড় সমস্যা। এ সমস্যা সামাজিক অস্থিরতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে। সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের উত্থানেও পরোক্ষভাবে মদদ জোগাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য ও ক্ষুধার ধকল থেকে মানব সমাজকে রক্ষা করা সবারই কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সংগতভাবেই বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এবং টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতি তৈরিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদিভাবে স্থিতিশীলতা আনার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন প্রায় এক দশক ধরে সুশাসন থাকায় বাংলাদেশ ভাগ্যবান। আমরা সতর্কতার সঙ্গে চার বছরের আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি হিসাব করে আমাদের কৌশল নির্ধারণ করেছি এবং গত ৯ বছর ধরে এটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে চাহিদা ও প্রয়োজনের মধ্যে সমন্বয় করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ একটি প্রধান বিবেচ্য বিষয় এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা ছাড়া এটি অর্জন করা যাবে না। বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্যের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে লড়াইরত একটি দেশ। ক্ষুদ্র আয়তনের বিশাল জনসংখ্যার একটি দেশ হওয়া সত্ত্বেও হার না মানা মনোভাবের কারণে বাংলাদেশ এ লড়াইয়ে সাফল্য দেখিয়েছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যেসব দেশকে সফল বলা যায় বাংলাদেশের অবস্থান সে তালিকায় শীর্ষে। গত সাড়ে চার দশকে চাষযোগ্য জমি অর্ধেক নেমে আসা এবং জনসংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হওয়া সত্ত্বেও হাজার বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ এখন ক্ষুধামুক্ত দেশ। একইভাবে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য সবার জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে। এটি সম্ভব হয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশের কারণে। ক্ষুধার্ত মানুষের বেকার হাতকে কাজের হাত বানানোর কারণেই অর্জিত হয়েছে এ সাফল্য।