শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম

মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম

ইসলামের পঞ্চ ভিত্তির দ্বিতীয় ভিত্তিটা হচ্ছে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কায়েম করা। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় নামাজ কায়েম করার নির্দেশ দিয়েছেন।  যেমন সূরা বাকারার ৪৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন— নামাজ কায়েম কর। সূরা মুমিনুরের ১ ও ২নং আয়াতে ইরশাদ করেন— ওই মুমিনগণ সফলকাম। যারা নিবিড়চিত্তে গভীর ধ্যানের সঙ্গে নামাজ আদায় করে। অর্থাৎ অন্তরের প্রশান্তির একমাত্র গ্যারান্টি হচ্ছে নিবিড়চিত্তে বিনম্রভাবে নামাজ আদায় করা। হাদিস শরিফে নামাজকে জান্নাতের চাবি বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মুসনাদে আহমদের ৩নং খণ্ডে ইরশাদ হচ্ছে— জান্নাতের চাবি হচ্ছে নামাজ। হাদিস নং-১৪৫৯৭।

শেষ বিচারের দিনে সব আমলের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব হবে বলেও নাসায়ী শরিফের ৪০০২নং হাদিসে উল্লেখ আছে—  আল্লাহ শরিয়তের সব বিধান রসুল (সা.)কে প্রদান করেছেন জিবরাইলের মাধ্যমে কিন্তু একমাত্র ব্যতিক্রম হলো নামাজ। মহিমান্বিত রাতে গুরুত্বপূর্ণ এক অলৌকিক ঘটনা মেরাজের মাধ্যমে আল্লাহ তার রসুল (সা.)কে ঊর্ধ্ব জগতে তার সান্নিধ্যে নিয়ে সরাসরি একটি বিধান দান করেছেন সেটাই হলো নামাজ। রসুল (সা.) ইরশাদ করেন ইমান এবং কুফরের মাঝে পার্থক্য হলো নামাজ। (তিরমিজি, মুসলিম)

নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। নামাজ কায়েম করাকে মহান আল্লাহতায়ালা ইসলামী রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহতায়ালা সূরা হজের ৪১নং আয়াতে ইরশাদ করেন— তাদের যদি পৃথিবীতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেওয়া হয় তাদের সর্বাগ্রে কর্মসূচি হবে নামাজ প্রতিষ্ঠা করা। সূরা আনকাবুতের ৪৫নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন— ‘নিশ্চয়ই নামাজ সব অন্যায় ও পাপাচার থেকে বিরত রাখে।’ খলিফা উমর (রা.) সব সরকারি অফিসারের কাছে একটি নোটিস প্রেরণ করেছেন। নোটিসের মধ্যে তিনি লিখেন— তোমাদের অফিসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো আমার দৃষ্টিতে নামাজ। যে অফিসার সঠিকভাবে ঠিক সময়ে নামাজ আদায় করে আমি মনে করব সে অফিসের দায়িত্ব সঠিকভাবে আদায় করছে। আর যে ব্যক্তি নামাজকে নষ্ট করছে (নামাজ সুন্নত অনুযায়ী সঠিক সময় আদায় করেছে না) সে অফিসের দায়িত্ব নষ্ট করছে, সঠিকভাবে আদায় করছে না। (মুয়াত্তা মালেক : নামাজের অধ্যায়)।

এক হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা আমাকে যেভাবে নামাজ পড়তে দেখ সেভাবে নামাজ পড়। রসুল (সা.)-এর উপরোক্ত নির্দেশটি ছিল সরাসরি তার সাহাবাগণকে উদ্দেশ করে, তবে এ নির্দেশ মূলত সব উম্মতের জন্য প্রযোজ্য সাহাবাদের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। এখন প্রশ্ন জাগে! তাহলে সাহাবায়ে কেরামের পরবর্তী উম্মত যারা রসুল (সা.)কে সরাসরি দেখার সৌভাগ্য লাভ করেনি যেমন আমরা, আমাদের জন্য রসুলের সেই নামাজের ধরন পন্থা বোঝার উপায় কী?  সাহাবাগণের বিবরণ ও তাদের বর্ণিত আমল থেকে আমাদের তা শিখতে হবে।

লেখক : শাইখ হাদিস ও প্রধান মুফতি শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক

রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর