শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পের রূপান্তর

প্রযুক্তির ব্যবহার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়াবে

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এ ক্ষেত্রে প্রথম স্থানে আছে চীন এবং তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য সত্যিকার অর্থে বিশাল। তবে চীন তৈরি পোশাকশিল্প থেকে সরে আসছে এবং ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশ পরিমাণগত দিক থেকে অনেক বেশি পোশাক রপ্তানি করলেও তার সিংহভাগ কম দামের পোশাক হওয়ায় রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা বেশি দামের পোশাক অর্থাৎ স্যুট ও জ্যাকেট উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে দেশে মানসম্মত পোশাক তৈরির কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাকশিল্পে অটোমেশন ও প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়লে বাংলাদেশি পোশাক বা ফ্যাশন পণ্যের কদর আরও বাড়বে। উদ্যোক্তারা কম অর্থ খরচ করে বেশি দামি পোশাক উৎপাদনে সক্ষম হবেন, শ্রমিকও লাগবে কম। বাংলাদেশের প্রতিযোগী চীন, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়া পোশাকশিল্পে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ভালো পোশাক উৎপাদন ও মূল্য সংযোজনের জন্য বাংলাদেশও সে পথেই হাঁটছে। দেশের উদ্যোক্তারা যে হারে সবুজ কারখানা স্থাপনের দিকে ঝুঁকছেন, তাতে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারবেন বলে আশা করা যায়। পোশাকশিল্পে এখন নতুন করে যারা মেশিনারিজ আমদানি করছেন, তারা সবাই অটোমেটিক পণ্য তৈরির দিকে নজর দিচ্ছেন। প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প এগিয়ে গেলেও প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বর্তমান অবস্থান মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। কারণ, বাংলাদেশের মূল প্রতিযোগী দেশগুলো উচ্চ প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। এ অবস্থায় আধুনিকায়নের মাধ্যমে বর্তমানের চেয়ে বেশি হারে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। পোশাকশিল্প দেশের সবচেয়ে শ্রমনির্ভর শিল্প এবং ৪০ লাখ মানুষ এ শিল্পে জড়িত, যার সিংহভাগই নারী। এ শিল্প এগিয়ে নিতে এবং শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে উত্থানের স্বার্থে পোশাকশিল্পের আধুনিকায়ন সময়ের দাবি। এ উদ্যোগ সফল করতে সরকার ও উদ্যোক্তাদের একযোগে কাজ করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর