রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের অপকৌশল

রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে সময় ক্ষেপণ গ্রহণযোগ্য নয়

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের দৃশ্যত কোনো আপত্তি নেই। মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিয়াও সুইকফি ঢাকায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে শুক্রবারের বৈঠকেও আশ্বাস দিয়েছেন নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে পর্যায়ক্রমে ফেরত নেওয়া হবে। তবে কবে এই প্রত্যাবর্তন শুরু হবে সে বিষয়ে কোনো কথা দেননি তিনি। দুই পক্ষের সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকে বাংলাদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৬৭৩ পরিবারের ৮ হাজার ৩২ জনের তালিকা মিয়ানমারের মন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তালিকাটি যাচাই-বাছাই করে তালিকাভুক্তরা তাদের নাগরিক হলে ফেরত নেওয়া হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথম ধাপে দুই দেশের শূন্যরেখায় যে ৬ থেকে ৭ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে তাদের প্রত্যাবাসনে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মিয়ানমারও এ বিষয়ে ঐকমত্যে উপনীত হয়। বৈঠকে ঠিক হয়, এজন্য ২০ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে দুই দেশের আলোচনা হবে। সেখানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। ওই বৈঠকে মিয়ানমার জানাবে কীভাবে শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত নেবে। বৈঠকে অভিবাসী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঁচটি সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে কথা হয়েছে এবং অভিবাসীদের দেশে নিয়ে পুনর্বাসন, তাদের জন্য প্রাথমিকভাবে বাড়িঘর নির্মাণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। মিয়ানমার এ প্রস্তাবে একমত হলেও পুনর্বাসনের কাজ কবে শুরু হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। বাংলাদেশে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার অবস্থান সমূহ সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সংকটের গ্রন্থিমোচনের একমাত্র উপায় বাংলাদেশের ঘাড় থেকে রোহিঙ্গাদের বোঝা নামানো। মিয়ানমার এ বিষয়ে একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাবাসনের আসল কাজটি শুরু না করায় সমস্যা সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সময় ক্ষেপণের যে অপকৌশল মিয়ানমার বেছে নিয়েছে তা রোধে জাতিসংঘসহ বিশ্বসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর