শিরোনাম
শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন

বন্ধ হোক এ অপকর্ম

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা তাদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণহত্যার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে শুরু থেকে। রাখাইন চরমপন্থিদের সঙ্গে নিয়ে তারা পরিকল্পিতভাবে এই মানবতাবিরোধী অপকর্ম করছে বেপরোয়াভাবে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অনুসন্ধানেও এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। তাদের মতে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক প্রচারণা সেখানকার সমাজকে বিদ্বেষী করে তুলেছে। সমাজের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়া সেই বিদ্বেষই রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে মদদ জুগিয়েছে। ঘৃণাপ্রসূত রাজনৈতিক প্রপঞ্চ সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য উসকে দিচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাটি মিয়ানমারের সংকট ও রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে সমাজে বাড়তে থাকা বিদ্বেষের ফল বলে আখ্যা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার প্রশ্নে নেতৃত্বের শূন্যতাকেও সংকটের কারণ মনে করছে তারা। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে জবাবদিহির মুখোমুখি দাঁড় করানোর তাগিদ দিয়েছে। গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও জাতিসংঘের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সব পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা অভিযান শুরু হয়েছিল। রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অনুসন্ধান প্রতিবেদন তাৎপর্যের দাবিদার। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ছয় দশক ধরে দেশের সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর নিধনযজ্ঞে লিপ্ত। বর্মি জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়ে সেনাবাহিনী দেশের শাসনক্ষমতায় তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে চাচ্ছে। দেশে দৃশ্যত নির্বাচিত বেসামরিক সরকার কায়েম হলেও নানা কৌশলে তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংখ্যালঘুবিদ্বেষী ভূমিকার সবচেয়ে বড় শিকার মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। জঙ্গি সংগঠন আরসার সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে অপরাধমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে তা মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের জন্যও হুমকিস্বরূপ। মিয়ানমারের জাতীয় স্বার্থেই এই নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ডের অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর