বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা কি মুক্তি পাচ্ছেন?

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা কি মুক্তি পাচ্ছেন?

স্বার্থ আর দ্বন্দ্বের হানাহানির যুগে যেখানে মানুষ মানুষকে কোনো কোনো সময় অপ্রয়োজনীয় পশুর চেয়ে অনাদর-অবহেলা করে, একজন আরেকজনের মানসম্মান, জীবন-সম্পদ কেড়ে নেয়; সেই সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি এমন আবেগ, ভালোবাসা ও উৎকণ্ঠা আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত ও বিস্মিত করেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে এর জন্মলগ্ন থেকে লেখালেখি করি। এ যাবৎ যত লিখেছি তার মধ্যে রাখাল চন্দ্র নাহার ফাঁসি মওকুফ এবং কেন নির্ধারিত সময় মুক্তি হলো না— পাঠকদের যে নাড়া দিয়েছে তা কল্পনাও করতে পারিনি। সাগরের জলের মতো আমাদের জীবনে অনেক জোয়ার-ভাটা গেছে, অনেক উত্থান-পতন তার পরও একটা মানবিক বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আছে বলে অন্য কাউকে না বলে তাকে উদ্দেশ করে গত পর্বে লিখেছিলাম এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ১৮ তারিখে ব্যক্তিগতভাবে রাখাল চন্দ্র নাহার তাত্ক্ষণিক মুক্তির জন্য পত্র দিয়েছিলাম। যার কপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, আরও যাকে যাকে পাঠানো দরকার পাঠিয়েছিলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান। স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন তিনি। দেখতে-শুনতে চমৎকার। অসংখ্যবার দেখা হয়েছে, কথাবার্তা হয়েছে। তখন যা বলেছি হাসিমুখে করেছেন। তার কাজকর্মে আমরাও খুশি হয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হওয়ার আগে ছিলেন এনবিআরে। তার ব্যাপারে অনেক শুনেছি।  আগাগোড়াই লোকটিকে আমার কর্মঠ মনে হয়েছে। চার-পাঁচ দিন আগে ফোন করেছিলাম, রাখাল চন্দ্র নাহার ব্যাপারে তাকে একটি কপি পাঠিয়েছি তা জানাতে। তিনি অসম্ভব সাড়া দিয়েছিলেন। সঙ্গে বলেছিলেন, মেহেরবানি করে আরেকটি কপি যদি পাঠান ভালো হয়। সেই কপিও পাঠিয়েছি। চমত্কৃত হয়েছি তাকে ফোন করায় তিনি ধন্যবাদ দিয়ে একটি খুদে বার্তা পাঠানোয়। ব্যাপারটি আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগে মাহবুবুল আলম উপদেষ্টা ছিলেন। সকাল ৮টা-সাড়ে ৮টার দিকে বিশেষ প্রয়োজনে ফোন করেছিলাম। কয়েকবার রিং করেও পাচ্ছিলাম না। ১৫-২০ মিনিট পর হঠাৎই তার ফোন। অবাক হয়েছিলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা সরাসরি ফোন করেছেন। বলেছিলাম, আপনার ফোন ব্যাক করা এ এক অভাবনীয় ব্যাপার। মাহবুবুল আলম বলেছিলেন, সিদ্দিকী সাহেব! কেউ ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে ধরতে পারলে ভালো। না পারলে ফিরতি ফোন করাই ভদ্রতা। আপনি হয়তো ভুলে গেছেন, বঙ্গবন্ধু যেদিন আপনার কাছ থেকে অস্ত্র নিতে টাঙ্গাইল গিয়েছিলেন সেদিন একজন সাংবাদিক হিসেবে আমিও সেখানে ছিলাম। আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারা তো সৌভাগ্য, গর্বের ব্যাপার। নজিবুর রহমানের খুদে বার্তা আমাকে তার চাইতেও বেশি আনন্দিত-উত্ফুল্ল করেছিল। সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারীদের মাটির মানুষ হওয়া উচিত। একজন মুসলমান যেভাবে আল্লাহর ইবাদত করে, হিন্দু যেমন করে ভগবানের আরাধনা করে একজন রাষ্ট্রীয় উচ্চ পদাধিকারীর ঠিক তেমন করে সরকারি কাজ করা উচিত। তার রাগ-বিরাগ-আলস্য কোনো কিছুই কাজ করবে না। তার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ইবাদতের মতো হবে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র আরও কিছু জায়গায় হৃদয়বান-বিবেকবান কর্মঠ মানুষের সমন্বয় হওয়া উচিত। এসব জায়গায় হেলাফেলা হলে দেশ, সমাজ ও মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রাখাল চন্দ্র নাহা একজন মুক্তিযোদ্ধা। নানাভাবে খোঁজ নিয়ে দেখেছি নাহা সম্পূর্ণই নির্দোষ-নিরপরাধ। তার পরও আদালত তাকে ফাঁসি দিয়েছিল। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমরা ছোটাছুটি করে দণ্ড মওকুফ করিয়েছিলাম। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অনেক আগেই তার মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু সে সুযোগ সে পায়নি বরং এখন দেখছি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সে বেশি শাস্তি পেয়েছে বা পাচ্ছে। বর্তমান সরকার কত অহংকার করে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে কত কথা বলে; অথচ কতভাবেই যে মুক্তিযোদ্ধারা বঞ্চিত-অপমানিত-অবহেলিত হচ্ছে— এদিকে কারও কোনো খেয়াল নেই। বধ্যভূমি সংরক্ষণ, জাদুঘর নির্মাণ আরও কত কী প্রকল্প কতজনের মাথায় ঘোরাফেরা করছে, কে তার খবর রাখে? কোনো কিছুতে দরদ নেই, সঠিক গাঁথুনি নেই। এই সেদিন কিছু স্থানে কিছু জাদুঘর নির্মাণের কথা শুনলাম। সেখানে বাতেন বাহিনীর নামে দেলদুয়ারে এক জাদুঘরের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখন নিশ্চয়ই খন্দকার বাতেন আওয়ামী লীগ করে, সেহেতু বাতেন বাহিনী হতে পারে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তেমন কিছু করেনি। ৭০-৭২ জন এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করেছে, স্বাধীনতার পর ৫০টি রাইফেল-স্টেনগান পুলিশের কাছে জমা দিয়েছে, ’৯০-’৯৪ সাল পর্যন্ত গণবাহিনী করে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে— আজ সেসবের কোনো দায়দায়িত্ব, কোনো প্রশ্ন নেই। কলিবর রহমান বাঙ্গালী, মেজর মোস্তফা, কমান্ডার রিয়াজ, বাবুল এবং ঝনঝনিয়া মাদ্রাসায় দিবালোকে একসঙ্গে ১৪ জনকে খুন করেছে। টাঙ্গাইল ক্লাবে কয়েক গজ দূর থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে গুলি করেছিল। এখন সেই বাতেন সরকারি দলে। অথচ এক লাখ চার হাজার অস্ত্র দিয়েছি বঙ্গবন্ধুর পদতলে, কাদেরিয়া বাহিনীর কোনো নাম নেই। এ রকম কত যে অসংগতি বলার মতো নয়। হয়তো কোথাও কোনো চেংরা পোলা, হয়তো ক্ষমতাও আছে শুধু বললেই হলো উনি মুক্তিযোদ্ধা নন বা সে মুক্তিযোদ্ধা নয়। মুক্তিযুদ্ধের পরও যদি তার জন্ম হয় তাহলেও তার চ্যালেঞ্জই যথেষ্ট। বছর চার আগের কথা, সখীপুরের এক মুক্তিযোদ্ধা, যখন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দেওয়া শুরু হয়েছে তখন থেকেই সে সম্মানী ভাতা পেয়েছে। এরপর মারা গেলে তার স্ত্রী উত্তরাধিকার হিসেবে মনোনীত হয়ে নির্বিবাদে বছর দু-তিনেক ভাতা পেয়েছে। সমস্যা হলো যদিও কাকের মাংস কাকে খায় না, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের মাংস মুক্তিযোদ্ধা নামধারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডাররা খায়। তার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাহেবরা সেই দরিদ্র মহিলাকে কাগজপত্র দিতে বললে লাল-নীল খাতা পত্র যা ছিল সব দিয়ে দেয়। এখন সেই কমান্ডার সাহেবরা কাগজপত্রও দেয় না। পাঁচ বছর আগে টাকা চেয়েছিল ৩০ হাজার। গরিব মানুষ যার ৩০ টাকা দেওয়া মুশকিল সে ৩০ হাজার দেবে কী করে? কমান্ডার সাহেবরা হয়তো ইউএনও অথবা সমাজকল্যাণ অফিসারকে বলেছে অমুক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা সন্দেহ। এমনিতেই নাচুনে বুড়ি তার ওপর ঢোলের বাড়ি— সঙ্গে সঙ্গে ভাতা বন্ধ। কেউ ভেবে দেখেনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা চালু হওয়ার সময় থেকে ভাতা পেয়েছে, সে পরলোকে গেলে নির্বিবাদে তার স্ত্রী পাচ্ছে। হঠাৎ কয়েকজনের অপছন্দ হওয়ায় ভাতা বন্ধ! কখনো জানতাম না, কেউ একবার কোনো ক্লাসে পাস করলে তাকে ফেল করানো যায়। যদিও আইয়ুব খানের সময় শেখ ফজলুল হক মণিসহ অন্য কয়েকজন নেতার এমএ ডিগ্রি দুবার বাতিল করা হয়েছিল। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে অমুক্তিযোদ্ধা বলা ডিগ্রি বাতিলের মতো নয়। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে যে অংশ নিয়েছে কারও পছন্দ হোক বা না হোক সে মুক্তিযোদ্ধা। তাকে সম্মান দিতে হবে। এখন আর সেসব নেই। আওয়ামী লীগের সময় কেউ আওয়ামী লীগ না করলে মুক্তিযোদ্ধা নয়, বিএনপির সময় বিএনপি না করলে মুক্তিযোদ্ধা নয়। এসব থেকে কবে মুক্তি পাব আল্লাহই জানেন।

যখন তখন অফিসারের ইচ্ছামতো মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বন্ধ হবে, যে কেউ যা খুশি বলবে, বললেই সে ভুয়া হবে, যারা যখন সরকারে আসবেন তাদের পছন্দমতো তালিকা করবেন আবার কেউ সে তালিকা বাতিলের জন্য আন্দোলন করবেন। মানে মুক্তিযোদ্ধাকে ভুয়া বানাতে, অমর্যাদা করতে বাইরের কারও প্রয়োজন নেই। নিজেরা নিজেদের নিয়ে কামড়া-কামড়ি করে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন হবেন— এ এক জাতীয় সমস্যা। আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের জন্য, সুযোগ-সুবিধার জন্য। এ রকম কামড়া-কামড়ির জন্য নয়, রাখাল চন্দ্র নাহার মতো ফাঁসিতে ঝোলা কিংবা অতিরিক্ত জেল খাটার জন্য নয়। এখন আর ঘোড়ার পেছনে গাড়ি নেই, সবাই ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে বসে বসে মজা করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম ভাতা দেওয়া হয় যুদ্ধাহত হিসেবে, এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা চালু করেন। সর্বশেষ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাষ্ট্র, সরকার বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও অনেক বড় একসময়ের এক রাজাকারের ছেলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সচিব বলে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, খেতাবপ্রাপ্ত, যুদ্ধাহত— এই তিন ক্যাটাগরির যে ভাতা বেশি হবে একজন মুক্তিযোদ্ধা শুধু সেই বেশিটাই পাবেন। এটা করতে গিয়ে একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পাচ্ছেন না, তিনি যদি খেতাব পেয়ে থাকেন সেটাও পাচ্ছেন না। মুক্তিযুদ্ধের সব থেকে শ্রেষ্ঠ হলো খেতাব। কাউকে কেউ কোনো বীরত্বসূচক খেতাব দয়া করে দেয়নি। মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা হওয়া খুব একটা কঠিন ছিল না, যুদ্ধ করতে গিয়ে যুদ্ধাহত হওয়াও অসম্ভব ছিল না। কিন্তু খেতাব পাওয়া ছেলের হাতের মোয়া নয়। অনেক ঝুঁকিপূর্ণ সাহসিকতার কাজ করা হানাদারদের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতে পারায় খেতাব পেয়েছেন। এখন দেখছি খেতাবপ্রাপ্তদের নিয়ে হেলাফেলার শেষ নেই। একজন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধার এখন যে ভাতা এর মোটামুটি দশ গুণ হলে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে তুলনা করা যেত। একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল জাতির গৌরব মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে অনেক বেশি অবসর ভাতা পান। অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা হওয়া উচিত ছিল একজন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলের সমান। তা হয়নি। কারও যদি চেতনা না থাকে তা জাগ্রত করা বড় কঠিন। তা না হলে একজন মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত এবং খেতাবপ্রাপ্ত হিসেবে কেন ভাতা পাবেন না। মুক্তিযোদ্ধা না হলে তিনি যুদ্ধাহত হতেন না, মুক্তিযোদ্ধা না হলে তিনি খেতাব পেতেন না। তাই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধাই আসল। একজন মুক্তিযোদ্ধা সে যত বড় বা যত ছোটই হোন তিনি অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাবেন, তিনি যুদ্ধাহত হয়ে থাকলে তার জন্য ভাতা পাবেন, যদি খেতাব পেয়ে থাকেন খেতাবপ্রাপ্ত হিসেবে পাবেন। সব কটি আলাদা বিষয়। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে যিনি যুদ্ধাহত ভাতা পান তিনি কখনো মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন না। যদি কোনো খেতাব পেয়ে থাকেন খেতাবেরও ভাতা পাচ্ছেন না যদি তিনি যুদ্ধাহত হন। কারণ যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বেশি। কয়েকবার বলার চেষ্টা করেছি শোনার এবং বোঝার লোকের বড় অভাব। মাননীয় মন্ত্রী কী করবেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী লোকজনের আড্ডাখানা। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ ও যোদ্ধাদের প্রতি সামান্য শ্রদ্ধাবোধ আছে বলে মনে হয় না। কল্যাণ ট্রাস্ট মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে না, মনে করে তারা মুনিব মুক্তিযোদ্ধারা চাকর-বাকর। রাখাল চন্দ্র নাহার ক্ষেত্রেও মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জেল কর্তৃপক্ষ সবার একটা অসম্ভব দায়িত্ব ছিল। কিন্তু কেউ তাদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করেনি। তা না হলে ফাঁসি থেকে যাবজ্জীবন এমন একটি সর্বোচ্চ আলোচিত মুক্তিযোদ্ধার বিষয়, দুই বছর পাঁচ মাস কারাদণ্ড শেষেও আটকে থাকতে হয়। এটা অভাবনীয়, অমার্জনীয় অপরাধ। আশা করি, স্বাধীনতার মাসের প্রথম দিনেই রাখাল চন্দ্র নাহা মুক্তি পাবে এবং জেলের অভ্যন্তরে নয়, মুক্ত হয়ে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে হেসে-খেলে এপার থেকে ওপারে যাত্রা করবে। তার মৃত্যু যেন কারাগারে হয়ে আমাদের জাতীয় কলঙ্কের বোঝা আর বৃদ্ধি না পায়।

 

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর