বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টেনে ধরুন

বন্ধ হোক অনিয়ম-অব্যবস্থা

সড়ক দুর্ঘটনায় গত সোমবার সারা দেশে অন্তত ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে লরির সঙ্গে সংঘর্ষে একটি বাস দুমড়েমুচড়ে গেলে ১০ জন নিহত হন। আহত হন অর্ধশতাধিক; যাদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে। শতাধিক পরিবারের জন্য ডেকে আনছে বিড়ম্বনা। দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারান তাদের পরিবার-পরিজনের বছরের পর বছর ধরে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। আহতদের একাংশকে সারা জীবন ভুগতে হয় পঙ্গুত্বের অভিশাপে। দুনিয়ার যেসব দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট দুর্ঘটনার কারণসংক্রান্ত পুলিশি প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বলেছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ঘটে ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা। সোনারগাঁয়ে দুর্ঘটনায় ১০ বাসযাত্রীর প্রাণ হারানোর পেছনে চালকের বেপরোয়া আচরণ অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবেশ-পরিস্থিতিসহ অন্য কারণে দুর্ঘটনার পরিমাণ ১০ শতাংশ। ইনস্টিটিউটের গবেষণায় বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার ৪৩ শতাংশই ঘটছে জাতীয় মহাসড়কগুলোয়। প্রতিদিনই সড়কে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। দেশে যানবাহন চালকদের অদক্ষতার কারণেই অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে। দেশে যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য বিআরটিএ সারা দেশে ১০২টি চালক প্রশিক্ষণ স্কুলের নিবন্ধন দিলেও এগুলোর কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। লাইসেন্স পেতে যে প্রশিক্ষণের দরকার, তা এসব স্কুল থেকে পাওয়ার কথা হলেও বাস্তবে ড্রাইভিং স্কুলের বেশির ভাগেরই হদিস নেই। ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে প্রশিক্ষণ স্কুলের প্রশিক্ষণ কোনো গুরুত্বই পায় না। উেকাচের বিনিময়েই মেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং এজন্য দালাল ধরতে হয়। যে কারণে লাইসেন্সপ্রত্যাশীরা প্রশিক্ষণের বদলে দালালদের পেছনেই সময় দেন। দেশের মহাসড়কগুলোয় লাখ লাখ নসিমন, করিমন, ইজিবাইকের চলাচল সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্ধন জোগাচ্ছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের চলাচলও সড়ক ব্যবস্থাপনাকে তছনছ করে দিচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে এসব অব্যবস্থার রাশ টেনে ধরার পাশাপাশি পথচারী ও যাত্রীদের সচেতনতাও বাড়াতে হবে। দেশের পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় নিতে হবে যুগোপযোগী উদ্যোগ।

সর্বশেষ খবর