বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভিয়েতনামি প্রেসিডেন্টের সফর

দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হোক

ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রান দাই কুয়াংয়ের বাংলাদেশ সফর বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন সোপানে উন্নীত করেছে। সফরকালে দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, প্রাণিসম্পদ ও যন্ত্র প্রকৌশল খাতে সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আসিয়ান জোটের সদস্য ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন। ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্টের সফরকে বাংলাদেশ পূর্বমুখী নীতির অংশ হিসেবে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশায় ভিয়েতনামি নেতাকে ঢাকায় লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে বহু দিক থেকে মিল রয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। লাখ লাখ মানুষের জীবন উৎসর্গের পরিণতিতে অর্জিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। আর ভিয়েতনামের সুদীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম তো ইতিহাসের এক বিস্ময়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও ভিয়েতনাম ছিল এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের আলোর দিশারি। এ দেশের তরুণদের মুখে স্লোগান উচ্চারিত হতো— ইতিহাসের দুটি নাম বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। দেশের মুক্তিসংগ্রামে হানাদার বাহিনীর জিঘাংসায় বাংলাদেশ যেমন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত হয়েছিল মার্কিন হামলায় ভিয়েতনামও তেমনি। মুক্তিসংগ্রামের মতো অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়েও দুই দেশ অভিন্ন মনোবল দেখিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। এশিয়ার অর্থনীতিতে দুটি দেশকেই নতুন বাঘ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রান দাই কুয়াংয়ের বাংলাদেশ সফরের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতার যে দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে, তা বহুদূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। ভিয়েতনাম হাইটেক, সামুদ্রিক খাবার, তথ্যপ্রযুক্তি, ইস্পাত ইত্যাদি ক্ষেত্রে বেশ এগিয়ে। বাংলাদেশে এসব ক্ষেত্রে ভিয়েতনামি বিনিয়োগে এগিয়ে এলে তা দুই দেশের জন্য লাভজনক হবে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও দুই দেশ বিভিন্ন ইস্যুতে অভিন্ন ভূমিকা রাখতে পারে। ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্টের সফরের সুবাদে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত হবে— এমনটিও আশা করা যায়।  মেকং নদের দেশ ভিয়েতনাম ও পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, বুড়িগঙ্গার দেশ বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বিশ্ব ও আঞ্চলিক শান্তির ক্ষেত্রে অবদান রাখবে— এমনটিও প্রত্যাশিত।

 

সর্বশেষ খবর