বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

উধাও হচ্ছে আবাসিক এলাকা

বাণিজ্যিকীকরণের প্রক্রিয়া রুখতে হবে

রাজধানীর আবাসিক এলাকাগুলোর বাণিজ্যিকীকরণ আবাসিক বৈশিষ্ট্যের ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষীয় নজরদারি না থাকায় রাজউক বা সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠিত আবাসিক এলাকাগুলো বাণিজ্য এলাকায় রূপান্তরিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিকীকরণের উৎসবে মেতেছে রাজউকের সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের যোগসাজশে রাজধানীর গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, লালমাটিয়া, উত্তরার মতো আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। আবাসিক চেহারা ও নাগরিক সুবিধা হারিয়ে এসব এলাকা হতশ্রী হয়ে উঠছে। গুলশান-বনানীর মতো এলাকার যেখানে-সেখানে হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও অফিস স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। আবাসিক ভবনের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শপিং কমপ্লেক্স, রেস্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যাংক, পারলারের ভিড়ে এলাকার আবাসিক বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যেতে বসেছে। ধানমন্ডির বেশ কয়েকটি সড়কে স্কুল শুরু ও ছুটির পর সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। গুলশান, বনানী, বারিধারা এবং উত্তরার অবস্থাও তা থেকে খুব একটা আলাদা নয়। ধানমন্ডি, গুলশানের মতো এলাকাগুলো শুধু সমাজের অভিজাত বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখেই আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু তাদের অন্যান্য চাহিদার জন্য আরও কিছু অনাবাসিক স্থাপনা গড়ে তোলার বিষয়টি তখন বিবেচনায় না আনায় অবাঞ্ছিত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আবাসিক এলাকার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ফিরিয়ে আনতে প্রায় দুই বছর আগে মন্ত্রিপরিষদের সভায় নগরীর আবাসিক এলাকার বৈধ-অবৈধ সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নে অনুমোদনবহির্ভূত সব ইমারতের নকশা বাতিল ও উচ্ছেদ করা, এসব স্থাপনায় সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল, ঢাকা ওয়াসাকে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন, ডেসা ও ডেসকোকে বিদ্যুৎ এবং তিতাসকে গ্যাস সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নির্দেশনার পর প্রায় দুই বছর কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত কোনো সংস্থাকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। আবাসিক এলাকার প্রথাসিদ্ধ চেহারা ফিরিয়ে আনতে এ ব্যাপারে সরকারকে আরও তৎপর হতে হবে। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তৎপর হতে হবে। রাজধানীকে বাসযোগ্য করে তোলার স্বার্থে যার বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর