রবিবার, ১১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

ক্রাইম ফ্রি জোন

সীমান্তে গড়ে উঠুক স্বস্তির পরিবেশ

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তকে শান্তির সীমান্তে পরিণত করার ক্ষেত্রে একধাপ এগোল দুই দেশ। এ উদ্দেশে প্রথমবারের মতো সীমান্তের ৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার এলাকাকে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ বা অপরাধমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে। বাংলাদেশের যশোর সীমান্তের পুটখালী ও দৌলতপুর বিওপির আওতাধীন সীমান্ত এবং বিপরীত দিকে ভারতের কাল্যাণী ও গুনারমঠ বিওপির আওতাধীন এলাকার সীমান্তকে গত শুক্রবার ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাসহ বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে। ক্রাইম ফ্রি জোন ঘোষিত সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচারসহ সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে যৌথভাবে লড়াই চালানোর উদ্দেশে এই ইতিবাচক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে অপরাধ প্রতিরোধে সার্বক্ষণিক নজরদারিরও ঘোষণা দিয়েছে বিজিবি ও বিএসএফ। সীমান্ত অপরাধে যারা জড়িত তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা নেবে দুই দেশ। পরীক্ষামূলক এই উদ্যোগ সফল হলে বাংলাদেশ ও ভারতের চার হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই এর আওতায় আনার চিন্তা করছে দুই দেশ। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকা দুনিয়ার জটিল সীমান্ত এলাকাগুলোর একটি। সীমান্তের দুই পাশের অধিবাসীদের ভাষা সংস্কৃতির অভিন্নতার কারণে এক দেশের অপরাধীদের পক্ষে অন্য দেশে সহজেই আত্মগোপন করা সম্ভব হয়। দুই দেশের সীমান্তকে অপরাধমুক্ত রাখার প্রত্যাশায় বিজিবি ও বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করলে অপরাধীদের পক্ষে তৎপর হওয়ার সুযোগ অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। অপরাধ দমনে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের প্রবণতাও একইভাবে কমে আসবে। দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশের সীমান্ত অপরাধ দমনে গুলিবর্ষণের ঘটনা মাঝে মাঝে জনমনে যে বিষাদের ছায়া ফেলছে তা এড়ানো সম্ভব হবে। ক্রাইম ফ্রি জোন হিসেবে যে এলাকাকে বিজিবি ও বিএসএফ বেছে নিয়েছে তা সাধারণভাবে অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এ এলাকাকে যৌথ উদ্যোগে অপরাধমুক্ত রাখা সম্ভব হলে তার সুফল পুরো সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। দুই দেশের সীমান্ত শান্তি ও স্বস্তির সীমান্তে পরিণত করার ক্ষেত্রে যা ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর