মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

চিকিৎসকদের ফাঁকিবাজি

কর্মস্থলে অনুপস্থিতি ঠেকাতে হবে

দেশের সরকারি চিকিৎসকদের ৬০ ভাগই কর্মস্থলে থাকেন না। বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির নৈরাজ্য চলছে বেপরোয়াভাবে। এদের একাংশ সংশ্লিষ্ট উপজেলায় কাজে যোগদানের পর থেকেই অনুপস্থিত। কেউ কেউ বিনা ছুটিতে কাটিয়ে দিচ্ছেন দিনের পর দিন। কর্মস্থল পছন্দ না হলে যোগদানের পর থেকেই চিকিৎসকরা ব্যস্ত থাকেন বদলির তদবিরে। সর্বশেষ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে যে ১১০ জন চিকিৎসককে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে তাদের বেশির ভাগই এখনো নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি। চিকিৎসকরা উপজেলা পর্যায়ের পদায়নকে এড়িয়ে চলেন এটি একটি ওপেন সিক্রেট। এজন্য তাদের কঠোরভাবে দোষারোপ করা হয়। কারণ বর্তমানে যারা সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোয় চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন তাদের সিংহভাগই সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। তাদের চিকিৎসা শিক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে লাখ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। বলাই বাহুল্য, এ টাকা এসেছে জনগণের দেওয়া ট্যাক্স থেকে। সেহেতু সাধারণ মানুষের সেবায় চিকিৎসকদের অবহেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ অবহেলাকে সরকারের ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা বলেও অভিহিত করেছেন বোদ্ধাজনেরা। তাদের মতে, কর্মস্থল আকর্ষণীয় করে এ সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। গ্রামের কর্মস্থল আকর্ষণীয় হলে চিকিৎসকদের অনীহা কেটে যাবে। উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার বিষয়েও ভাবা যেতে পারে। চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির কারণে উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া এলাকাবাসীর জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য খাতে সরকার যে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করছে তা ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে প্রত্যাশিত সুফল অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি সমস্যার সমাধানে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি তুলে ধরে বিতর্ক সৃষ্টির বদলে সমস্যার গভীরে যেতে হবে। চিকিৎসকদের অনীহার কারণ অনুসন্ধান করে তারা যাতে ইতিবাচক মনোভাব দেখান সে উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারি চিকিৎসক হিসেবে যারা নিয়োগ পাচ্ছেন, তারা গ্রামে কাজ করতে আপত্তি জানাবেন না, এ বিষয়ের নিশ্চয়তা নিয়েই চাকরি দেওয়ার কথা ভাবতে হবে। দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবায় ইতিবাচক ফল পেতে হলে সরকারি চিকিৎসকদের ফাঁকিবাজির প্রবণতায় বাদ সাধতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর