শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশ

পরিবর্তনের নায়ক দেশের সাধারণ মানুষ

পাল্টে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের পরিশ্রমী মানুষ পাল্টে দিচ্ছে বাংলাদেশকে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের গ্রাম মানেই ছিল জরাজীর্ণ ঘর-দুয়ার আর দারিদ্র্যের আঘাতে জর্জরিত জীবনের প্রতিচ্ছবি। দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৮০ জনই ছিল দরিদ্র শ্রেণির। ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ তাদের নিয়তির লিখন বলে বিবেচিত হতো। সময়ের বিবর্তনে সেই ছবি বদলে যাচ্ছে। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলজুড়ে লেগেছে দিন বদলের ছোঁয়া। এখন গ্রামে কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া কঠিন। তার বদলে গড়ে উঠেছে টিনের ঘর ও পাকা বাড়ি। হাড্ডিসার মুখগুলোও নেই। এর বদলে কর্মজীবী মানুষ আছে, পকেটে টাকাও আছে। ঘরে আছে রঙিন টেলিভিশন, ফ্রিজ। কারও আবার কম্পিউটার, তাতে জুড়ে দেওয়া ইন্টারনেট। ঘরে বসে এখন বাংলাদেশের কোনো এক প্রান্তের মানুষ হাতের মোবাইল টিপে মুহূর্তেই যোগাযোগ করছে প্রবাসের প্রিয়জনের সঙ্গে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ শতাংশের কাছাকাছি। শতকরা ৮০ ভাগের বেশি মানুষ ছিল দরিদ্র শ্রেণির। মানুষের গড় আয়ু ছিল ৪৬ বছর। বেশির ভাগ বাড়িতে ছিল কুঁড়েঘর ও মাটির গৃহ। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ছিল না বললেই চলে। নিরাপদ পানি ব্যবহারের হারও ছিল নগণ্য। সেই দেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭০ বছর। জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত এক দশক থেকেই ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে সাম্প্রতিক বছরে ৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সর্বশেষ খানা জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে খানা বা পরিবারপ্রতি মাসিক আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৪৫ টাকা। দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে ২৪ শতাংশে। একজন মানুষের দৈনিক খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার গ্রাম। ২০১৬ সালের জরিপ অনুযায়ী, ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের প্রায় অর্ধেক বাড়িঘর টিন ও কাঠের তৈরি। উপরন্তু প্রায় ৩০ শতাংশ রয়েছে পাকা বাড়ি। প্রায় ৯৫ শতাংশ পরিবার নিরাপদ পানি পান করছে। বেড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবহারের হারও। ২০১০ সালে সাক্ষরতার হার ছিল ৫৭ দশমিক ৯ ভাগ; ২০১৬ সালে এ হার বেড়ে হয়েছে ৬৫ দশমিক ৬ ভাগ। বাংলাদেশের এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে সাধারণ মানুষের পরিশ্রমের ফসল হিসেবে।  হানাহানির রাজনীতিকে বিদায় দিতে পারলে পাল্টে যাওয়ার এ প্রক্রিয়া আরও জোরদার হবে। 

আসবে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর