শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

নগর জীবনের সংকট

জনসচেতনতার উদ্যোগ নিতে হবে

রাজধানী ঢাকা অচল নগরীতে পরিণত হচ্ছে এবং এটি শুধু নগরবাসী নয়, জাতির জন্যও লজ্জা বয়ে আনছে। ঢাকার এ দুরবস্থার জন্য ব্যবস্থাপনার সংকট যেমন দায়ী তেমন দায়ী নাগরিক সচেতনতার অভাব। জনসচেতনতার অভাবে রাজধানীর নগর জীবনে দুর্ভোগ ভাগ্যের লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হওয়া নাগরিকদের বৃহৎ অংশের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। উল্টোপথে ড্রাইভিং করাকে অনেকেই অপরাধ মনে করে না এই মহানগরীতে। ড্রাইভিংয়ের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা নিষিদ্ধ হলেও সে ব্যাপারে তাপ-উত্তাপ নেই বেশিরভাগ গাড়ি চালকের। রাজপথে চলার সময় প্রায়শই তীব্র হর্নে আঁতকে উঠতে হয়। মাইকসহ অন্যান্য শব্দ দূষণেরও নির্দয় শিকার রাজধানীবাসী। রাস্তায় চলাচলের সময় যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন বেশিরভাগ নাগরিক। রাজধানীর নগরজীবনে নিত্য বিড়ম্বনা সৃষ্টিকারী সমস্যাগুলো যুগ যুগ ধরে বিরাজ করছে নাগরিক সচেতনতার অভাবে। দেশে আইন-মান্যতার অভাব থাকায় অহরহ আইন ভঙ্গের ঘটনা ঘটেই চলেছে। রাজধানীর নগর জীবনের বিদ্যমান সংকটগুলোর বেশিরভাগই নিরসন করা সম্ভব আইন মেনে বা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। যেখানে সেখানে পার্কিং, উল্টোপথে ড্রাইভিং, বাসে যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানো-নামানোর প্রবণতা রোধ করা গেলে রাজধানীর যানজট অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ হলে নগর জীবন আরও পরিচ্ছন্ন তথা গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। আইন ভঙ্গ করলে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হয় না বলেই দেশে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনা প্রায়শই ঘটছে। নাগরিক জীবনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে শুধু ঢাকা মহানগরী নয়, সারা দেশেই তার সুফল অনুভূত হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, আইন প্রয়োগের দায়িত্ব যাদের তাদের অবহেলা যাচ্ছেতাই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাচ্ছে। ভিআইপিদের গাড়ি লাল বাতির সংকেত সত্ত্বেও চলাচল করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে অহরহ।  আইন মান্যতার বিষয়টি কড়াভাবে মেনে চলার অভ্যাস গড়ে উঠলে নাগরিক জীবন সুন্দর ও সহনশীল হয়ে উঠবে। এ জন্য সরকার, সিটি করপোরেশন সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর