সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক হুন্ডি ব্যবসা

কড়া আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিন

দেশের অর্থনীতির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনা। বিদেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে স্বজনদের কাছে যে রেমিট্যান্স পাঠান তার এক বড় অংশ আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে টাকা না আসায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশির সংখ্যা বাড়লেও রেমিট্যান্স আয় বাড়ার বদলে কমছে। ফলে দেশে দেখা দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা বিশেষত ডলারের সংকট। দেশের অর্থনীতি তেজি অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে। এমনকি ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের সংকট তৈরি হচ্ছে। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ায় ব্যাহত হচ্ছে বিনিয়োগ। এ অকাম্য অবস্থার উত্তরণে হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন নিরুৎসাহিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা তৎপর হওয়ায় দেশের অর্থনীতির জন্য বিপদ ডেকে আনছে। হুন্ডির ছোবল ঠেকাতে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বৈধ পথে আনার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হুন্ডির যে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে তা ভেঙে দিতে হবে শক্ত হাতে। বৈদেশিক মুদ্রানীতি আইন অনুযায়ী, বিদেশ থেকে দেশে অর্থ পাঠাতে হলে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠাতে হয়। আর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাঠাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগাম অনুমতি নিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। কিন্তু বিভিন্ন ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টরা বিদেশি হুন্ডি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলেমিশে যেভাবে অর্থ পাঠানোর কাজ করছেন, যা অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে অবৈধ পথে রেমিট্যান্স আসাকে। এ জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন ঘটেনি। কারণ হুন্ডি ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে তাদের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। হুন্ডি বন্ধে কড়া নজরদারির বিকল্প নেই। দেশে পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রবাসীরা যে অর্থ পাঠান তা যাতে ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। হুন্ডি ব্যবসা বন্ধে কড়া আইন প্রণয়নের কথা ভাবা যেতে পারে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর