শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

জনশক্তি রপ্তানি খাত

নতুন বাজার খুঁজতে হবে

বিশ্বের শ্রমবাজারে সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিশ্ব মন্দা বিশেষত জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে ভয়াবহভাবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাণভোমরার ভূমিকা পালনকারী এই খাতে প্রাণসঞ্চার করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোর দুয়ার বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য এখন কার্যত বন্ধ। চলতি বছরে বিদেশগামী ১০ লাখ কর্মীর ৯০ শতাংশেরই গন্তব্য পুরনো বাজার মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। সে ক্ষেত্রেও বিরাজ করছে নানা ধরনের সংকট। সৌদি আরবের নতুন নিয়ম, আমিরাতের ভিসা বন্ধ, কুয়েতের নতুন নিষেধাজ্ঞা, লিবিয়ার অস্থিরতা মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারের সংকটকে দীর্ঘায়িত করেছে। মালয়েশিয়ায় সরকারি পর্যায়ে জিটুটি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী প্রেরণ আশার আলো ছড়ালেও তাতে অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি করেছে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (আইসিএস) দেওয়ার নতুন পদ্ধতি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার, সৌদি আরব সে দেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থান বাড়াতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছোটখাটো পদে প্রবাসীদের কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদগুলোয় সৌদি নাগরিক নিয়োগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। সৌদি সরকারের এ সিদ্ধান্তে দেশটিতে প্রবাসীদের শ্রমবাজার সঙ্কুচিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি কর্মীদের কাজ পাওয়া ক্রমান্বয়ে কঠিন হয়ে পড়েছে। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কারণে ২৬ জন কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠানোর পর দেশটিতে বাংলাদেশিদের বদলে ভারত বা অন্য দেশের শ্রমিকদের নির্মাণ ও জাহাজ শিল্পে নিয়োগ করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার অক্ষুণ্ন থাকলেও উটকো ঝামেলায় তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একটি বিদেশি কোম্পানি মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণের ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য ঢাকায় যে অফিস খুলেছে তাতে হয়রানির পাশাপাশি বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিদেশে কর্মী প্রেরণের খরচ সহনশীল করতে এ ধরনের বাড়তি খরচের খাত বন্ধ করা দরকার।  পাশাপাশি শ্রমের নতুন বাজার খুঁজে বের করাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর