বৃহস্পতিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাসচালকদের পাল্লাপাল্লি

ওদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিন

দেড় কোটি মানুষের মহানগরী ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা আদতেই কম। যানজটের কারণে যানবাহন চলাচল বেশির ভাগ সময় হয় স্তব্ধ থাকে অথবা ধীরগতিতে চলে। তবে সুযোগ পেলেই গণপরিবহনের চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন, যা ওপেন সিক্রেট। বিশেষ করে বাসচালকরা একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দেওয়াকে তাদের কৃতিত্ব বলে ভাবেন। এমন ধরনের পাল্লা দেওয়ার ঘটনায় প্রায়ই দুর্ঘটনা অনিবার্য হয়ে ওঠে। বলা যায় রাজধানীতে যেসব সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে তার বেশির ভাগই হয় পাল্লা দেওয়ার অশুভ প্রবণতার কারণে। গত মঙ্গলবার দুই বাসের এমনই এক পাল্লা দেওয়ার নির্মম প্রতিযোগিতার শিকার হয়েছেন বাসযাত্রী এক কলেজছাত্র। রাজধানীর বাংলামোটর ও কারওয়ান বাজারের মাঝামাঝি পান্থকুঞ্জে বেসরকারি স্বজন পরিবহনের একটি বাস দোতলা একটি বাসকে ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে এগিয়ে যায়। এ সময় দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে থাকা কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের হাত থেঁতলে যায়। দুই বাসের প্রচণ্ড চাপে হাতটি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পথচারীরা দ্রুত গুরুতর আহত রাজীবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা বিচ্ছিন্ন সেই হাতটি তার শরীরে জুড়ে দিতে পারেননি। গরিব ঘরের সন্তান রাজীব হোসেন তিতুমীর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগের একটি মেসে থেকে তিনি পড়াশোনা করেন। তার পড়াশোনার খরচ চালান স্বজনরা। দুর্ঘটনার পর পুলিশ বাস দুটি এবং দোতলা বাসের চালককে আটক করে। মূল অপরাধী স্বজন পরিবহনের চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। রাজধানীতে বাসচালকদের বেপরোয়া আচরণের কারণে প্রায়ই যানজট অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। রাস্তার ওপর বাস থামিয়ে যাত্রী নেওয়া তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসগুলো প্রায়ই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। বাসমালিকদের সঙ্গে ট্রাফিক কর্তৃপক্ষের অলিখিত সমঝোতা থাকায় তারা যা ইচ্ছা তাই করার ধৃষ্টতা দেখায় এমন একটি রটনা রয়েছে। আমরা আশা করব পান্থপথের দুর্ঘটনায় দায়ী বাসচালকের দৃষ্টান্তমূলক সাজার ব্যবস্থা করা হবে। দুই বাসচালকের নোংরা খেলায় আহত কলেজছাত্রের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হবে— এমনটিই আমরা দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর