শনিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে টালবাহানা

আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ওয়াদা খেলাপকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে মিয়ানমার। দেশে অন্ততপক্ষে ১৪ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখ ৯৬ হাজার। সার্কভুক্ত দুটি দেশ ভুটান ও মালদ্বীপের মোট জনসংখ্যার সমান রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জানুয়ারি মাসের মধ্যভাগে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পাদিত ওই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে এক হাজার ৫০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় মিয়ানমার। দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া হবে এমন কথাও বলা হয় দুই পক্ষের আলোচনায়। বৈঠকে প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমার প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিদিন ৩০০ করে সপ্তাহে এক হাজার ৫০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। পরবর্তী তিন মাসে পর্যালোচনা করে এ সংখ্যা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু মিয়ানমার গত চার মাসে এ যাবৎ একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি। মিয়ানমার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া তাদের নাগরিকদের দুই মাসের মধ্যে ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর প্রতিশ্রুতি দিলেও সে কাজ এখনো শুরুই করেনি। এখন পর্যন্ত মাত্র ৬৭৫ জনকে তারা ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। স্মর্তব্য, প্রত্যাবাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা তৈরি করে মিয়ানমারের কাছে পাঠানো হয়। মিয়ানমার এ তালিকা থেকে মাত্র ৬৮৫ জনকে শরণার্থী হিসেবে অনুমোদন দেয়। এর মধ্যে ১০ জনকে তারা সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করেছে। যাদের ফেরত নেওয়া হবে না বলে সাফ সাফ বলেও দিয়েছে।  মিয়ানমার যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া তার নাগরিকদের ফেরত নিতে অনীহা প্রকাশ করেছে চুক্তির পরও প্রত্যাবাসন শুরু না করা তারই প্রমাণ।  মিয়ানমারকে বাধ্য করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর