মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

বেহাল সড়ক

এই লজ্জার অবসান কাম্য

দেশের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা সম্পর্কে তিন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রবিবার শেরেবাংলানগরে এক মতবিনিময় সভায় তারা বলেছেন, এলাকায় গেলে মানুষের সামনে মুখ দেখানো যায় না। ভোটারদের সামনে লজ্জায় পড়তে হয়। পরিকল্পনামন্ত্রীর সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে বিটুমিনের ভঙ্গুর রাস্তার বদলে কংক্রিটের টেকসই রাস্তা নির্মাণের পক্ষে মত রাখেন সংসদ সদস্যরা। তাদের বক্তব্য— বিটুমিনের তৈরি রাস্তা অল্প দিনেই নষ্ট হয়। কংক্রিটের রাস্তা সে তুলনায় হয় দীর্ঘস্থায়ী। বিটুমিনের রাস্তা তৈরিতে অনিয়মের সুযোগ থাকলেও কংক্রিটের তৈরি রাস্তার ক্ষেত্রে সে সুযোগ কম। তবে প্রকৌশলীরা জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে বলেন, কংক্রিটের রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রেও দুর্নীতির সুযোগ থাকে। বিটুমিন না কংক্রিট— কোন পদ্ধতিতে রাস্তা নির্মাণ করা উচিত সে বিষয়ে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের বিবেচনা-পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে সবচেয়ে যেটি নিষ্ঠুর সত্য হয়ে দেশবাসীর বিরক্তির কারণ ঘটাচ্ছে তা হলো— দেশের শতকরা ৯০ শতাংশ সড়কই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গাঁওগ্রামের রাস্তার কথা বাদ দিলেও বলা যায় মহাসড়কগুলোর অবস্থাও মোটেই ভালো নয়। খোদ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর অবস্থা এতটাই বেহাল যে, তা গ্রামের রাস্তাকেও হার মানায়। বাংলাদেশ দীর্ঘ বছর ধরে ঘাড়ে চেপে বসা স্বল্পোন্নত দেশের লজ্জা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের সোপানে পা বাড়িয়েছে। কিন্তু দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোর দিকে চোখ দিলে এগুলো মান্ধাতা আমলের সড়ক বলেই মনে হয়। সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা যে সংসদ সদস্যদের লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে তা দেশবাসীর জন্য নিঃসন্দেহে একটি সুসংবাদ। কারণ, এই বেহাল অবস্থা অবসানের পথটিও তাদের নাগালে। দেশে গ্রাম কি শহর কোথাও সড়ক নির্মাণে ন্যূনতম মান রক্ষিত হয় না। লজ্জা থেকে বাঁচতে হলে কীভাবে মানসম্মত সড়ক নির্মাণ করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। চোরার দল ও চাটার দলেরা যাতে সড়ক খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের বেশির ভাগ লুটেপুটে না খায় তা নিশ্চিত করা দরকার। এ ব্যাপারে গণপ্রতিনিধি শুধু নয়, সড়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে গণকমিটি গঠনের কথা ভাবা যেতে পারে। তাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এবং পেশার লোকজনের অংশগ্রহণও থাকতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর