কোটা প্রথার গ্রহণযোগ্য সমাধানে প্রধানমন্ত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষোভ নিরসনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর বৈঠকের পর কোটাবিরোধী আন্দোলন এক মাস অর্থাৎ আগামী ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছেন, কোটা প্রশ্নে সরকার অনড় অবস্থানে নেই। শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টা ইতিবাচকভাবেই দেখছে। মন্ত্রী একই সঙ্গে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কোটা সংস্কারের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। তাহলে কেন তার বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর করা হলো? তার পরিবারের সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে বাগানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেছেন, তারা হামলা করেননি। অনুপ্রবেশকারী ও বহিরাগতরা এ হামলা করেছে। আমরা ছাত্রদের বলেছি যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। ছাত্র প্রতিনিধিরা তাতে একমত হয়েছেন। পুলিশ যাতে সাধারণ ও নিরীহ কোনো ছাত্রকে হয়রানি না করে সেজন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভিসির বাসভবনে যারা হামলায় জড়িত তাদের শাস্তি পেতে হবে। ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন কোটা সংস্কারের বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছেন। আশা প্রকাশ করেছেন, এখন পর্যন্ত আমার যেসব ভাইবোন গ্রেফতার হয়েছেন তাদের সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হবে এবং পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে সরকার। কোটা প্রথা নিয়ে যে অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠেছে তা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক মনোভাব প্রশংসার দাবিদার। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অশুভ একটি মহল কোটা প্রথাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় নেমেছে। এ অপপ্রচারে বাদ সাধতেই কোটা প্রথার যুক্তিযুক্ত সংস্কার অবশ্যই কাম্য। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ সংকট মোচনে সহায়ক হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। একইভাবে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যে অশুভ মহলটি রাতের আঁধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে সেই মুখোশধারীদেরও বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত হওয়া দরকার।