শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

ওদের আইনের আওতায় আনুন

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। পাচারকারীর মধ্যে আছে অসৎ ব্যবসায়ী, অসৎ রাজনীতিক, দুর্নীতিবাজ আমলা এবং অপরাধজগতের কুশীলবরা। ব্যাংক ঋণ নিয়ে লোপাট করতে তা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিদেশে। জাল কাগজপত্রে মর্টগেজ দিয়ে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে তা লোপাট করা দেশের ব্যাংকিং খাতের ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। লোপাট করা অর্থের বড় অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। আমদানি-রপ্তানির এলসি খুলে বাস্তবে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি বা রপ্তানি করার কথা তা না করে বিল পরিশোধের মাধ্যমে অর্থ পাচার ঘটছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ঢাকা ব্যাংকের একটি শাখায় ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে জালিয়াতির বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে ধরা পড়েছে। এ জালিয়াত চক্রকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চিহ্নিতও করেছে। প্রতারক এই সিন্ডিকেট বিভিন্ন ব্যাংকে এভাবেই প্রতারণা করে অর্থ পাচার করে চলেছে। প্রতারক এই সিন্ডিকেট-সংশ্লিষ্টরা একটি বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও গোয়েন্দা সংস্থা তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথম শ্রেণির আরেকটি বেসরকারি ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জাল দলিলপত্র জমা নিয়ে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলে ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের দায়ে গ্রেফতার করে দুদক। শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন জিনিস আমদানির নামে ব্যাক টু ব্যাক ভুয়া এলসি খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে গত কয়েক বছরে ব্যাংক খাত থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এলসির কাগজপত্র তৈরি ও অন্য ব্যাংকে তা বিক্রি করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ নেওয়া এবং ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলে অর্থ পাচার দেশের অর্থনীতিকে বিপদাপন্ন করে তুলছে। দেশের বিপুল টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়ায় তার কুফল দেখা দিচ্ছে অর্থনীতিতে। এই অশুভ কর্মকাণ্ডে রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুষ্টচক্রের জড়িত থাকার খবরটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। আমাদের বিশ্বাস, অপরাধী চক্রকে আইনের আওতায় আনতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছুই করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর