শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুদের পরিণতি ভয়াবহ

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

সুদের পরিণতি ভয়াবহ

প্রদত্ত ঋণের ওপর নির্ধারিত হারে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করাকে সুদ বলে বা একই জাতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে কম পণ্যের বিনিময়ে অতিরিক্ত পণ্য গ্রহণ করাকে সুদ বলা হয়। তবে সুদকে কোনো কোনো এলাকায় লাভ বা উপরি বলে। সুদকে আমরা যে নামেই ডাকি না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে সুদ দেওয়া, সুদ নেওয়া বা কোনোভাবে সুদি লেনদেনের সঙ্গে জড়িত হওয়া নিকৃষ্ট ও জঘন্যতম অপরাধ এবং এর পরিণতি হচ্ছে জাহান্নাম। সুদি লেনদেনের মাধ্যমে এক পক্ষ সর্বদা লাভবান হয়, অন্য পক্ষ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সুদ সমাজে অপরাধ, অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা বিস্তার করে এবং মানুষকে করে অতি দুনিয়ালোভী। কিন্তু অতি দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়, সুদ আমাদের সমাজে আজ সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। সুদি লেনদেনে জড়িতরা কিয়ামতের দিন পাগল ও মাতাল অবস্থায় উঠবে। সেদিন লোকজন তাদের দেখেই চিনতে পারবে এরা সুদখোর।

মহান আল্লাহ এ সম্পর্কে আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘যারা সুদ খায়, কিয়ামতের দিন তারা ওই ব্যক্তির মতো দণ্ডায়মান হবে, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলে, কেনাবেচা সুদের মতো। অথচ আল্লাহ কেনাবেচা বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার রবের পক্ষ থেকে উপদেশ আসার পর সে বিরত হয়, আগে যা হয়ে গেছে তা তার এবং তার ব্যাপারটি আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদের দিকে ধাবিত হয়, তারা জাহান্নামের অধিবাসী। চিরকাল তারা সেখানে অবস্থান করবে।’ সূরা বাকারা : ২৭৫।

আল্লাহতায়ালা কোরআনের অন্যত্র আরও ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। সূরা আলে ইমরান : ১৩০।

প্রিয় পাঠক! আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা শোনার পরও যারা সুদি লেনদেন থেকে বিরত না হয়, মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।

এ ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা সূরা বাকারার ২৭৯ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন, ‘আর যদি তোমরা সুদ পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। আর তোমরা যদি তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। তোমরা জুলুম করো না এবং তোমাদের ওপরও জুলুম করা হবে না।’ প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সুদি লেনদেনে জড়িতদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন এবং এহেন অপরাধের কঠোর পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর