রবিবার, ৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড়ে হানাহানি

সন্ত্রাসী দমন ও অস্ত্র উদ্ধারের উদ্যোগ নিন

পাহাড়ে আবারও রক্তপাতের অপচর্চা নিঃসন্দেহে একটি উদ্বেগজনক ঘটনা। পাহাড়ি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর অন্তর্দ্বন্দ্বে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনে প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন। যাদের মধ্যে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) শীর্ষ স্থানীয় নেতা ও নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা ও ইউপিডিএফের (গণতান্ত্রিক) আহ্বায়ক তপন জ্যোতি চাকমা বর্মা। অন্য দুজন জনসংহতির সহযোগী সংগঠন যুব সমিতির মহালছড়ি শাখার সভাপতি ও সদস্য এবং একজন মাইক্রোবাস চালক। গত বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন নানিয়ারচরের উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে শুক্রবার মাইক্রোবাসযোগে নানিয়ারচরে যাওয়ার পথে বেতছড়ি এলাকায় প্রতিপক্ষ গ্রুপের সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা চান চালকসহ আরও দুজন। এ ঘটনায় আহত হন আরও আটজন। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ পার্বত্য চট্টগ্রামের উগ্রপন্থি রাজনৈতিক সংগঠন ইউপিডিএফ দুই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। শান্তিচুক্তিবিরোধী এ সংগঠনটি দ্বিধাবিভক্তির কবলে পড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও চাঁদাবাজি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে। ইউপিডিএফ ভেঙে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) নামে নতুন সংগঠন আত্মপ্রকাশ করলে পার্বত্য এলাকায় দুই পক্ষের সংঘাত ঘনীভূত হয়ে ওঠে। ইউপিডিএফের ধারণা তাদের সংগঠনে ভাঙন সৃষ্টিতে জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমা ইন্ধন জুগিয়েছেন। তার হত্যার পেছনে ইউপিডিএফের হাত রয়েছে বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ ওঠেছে। শক্তিমান চাকমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেওয়ার সময়  ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মাকে হত্যার পেছনে পার্বত্য চট্টগ্রামে একক সংগঠন হিসেবে ইউপিডিএফের আত্মপ্রকাশের আকাঙ্ক্ষা কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর হানাহানি সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের সম্মুখীন করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী দমন ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পদক্ষেপ নেবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ডে হতাহতদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর