শনিবার, ১৯ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল পণ্য

জালিয়াতদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

সিয়াম সাধনার মাস রমজানে অসৎ ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য ইতিমধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের হুঁশিয়ারিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে নকল ও ভেজাল পণ্যের তোড়জোড় শুরু হয়েছে রাজধানীজুড়ে। মাহে রমজান এবং ঈদকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষীয় অনুমোদন ছাড়াই যেখানে সেখানে কারখানা বসিয়ে ভেজাল খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন চলছে। স্বাস্থ্যহানিকর এসব খাদ্যপণ্যের বাজারজাতও চলছে ঢাকঢোল পিটিয়ে। ইফতারির পণ্যও ভেজালের বিষমুক্ত থাকছে না। বাজারে যে আম বিক্রি হচ্ছে তার ৯০ ভাগই বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো। ঈদকে সামনে রেখে নকল কারখানায় উৎপাদিত প্রসাধন সামগ্রী রাজধানীসহ সারা দেশে বাজারজাত হচ্ছে। প্রতি বছর রমজানের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে বিএসটিআই, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো ভেজালবিরোধী অভিযান চালায়। এ বছর কর্তৃপক্ষীয় ঢিলেঢালা ব্যবস্থাপনার সুযোগে নকল ও ভেজাল পণ্য উৎপাদনকারীরা তৎপর হয়ে উঠেছে। শুধু রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে গড়ে উঠেছে খাদ্যপণ্যের অসংখ্য কারখানা। এগুলোতে মানহীন-অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সেমাই, লাচ্ছা সেমাই, নুডলস, ঘি, হলুদ, মরিচ, মসলা, বেসন ইত্যাদি। এসব ভেজাল পণ্যে যথেচ্ছভাবে মেশানো হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নানা উপকরণ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে কৌশলে বাইরে তালা ঝুলিয়ে আলো-আঁধারি পরিবেশে উৎপাদন করা হচ্ছে নকল ভেজাল খাদ্যপণ্য। খাদ্যপণ্যে ভেজাল মেশানো আমাদের দেশে অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফল গাছে থাকতেই চলে রাসায়নিক ব্যবহারের প্রক্রিয়া। বাজারজাত করার সময় ফরমালিনের মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় পচন রোধের জন্য। যে ফল মানুষ খায় পুষ্টি অর্জনের জন্য তা শেষ পর্যন্ত বিষ খাওয়ার নামান্তর হয়ে দাঁড়ায়। খাদ্যপণ্য ও ফলমূলে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহারে লিভার কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে, কিডনি নষ্ট হচ্ছে, ক্যান্সারসহ নানা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষত রোজার মাসে ইফতারি পণ্যে নকল ভেজাল চলতে থাকলে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।  রোজার মাসে রাজধানীসহ দেশবাসীকে নকল ভেজালের দৌরাত্ম্য থেকে রক্ষায় ঢিলেঢালাভাবে নয়, অবিলম্বে নকল ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করা হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর