বুধবার, ২৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

আয়াতুল কুরসির ফজিলত

মাওলানা তরিকুল ইসলাম আল আযহারী

আয়াতুল কুরসির ফজিলত

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে রমজানের জাকাতের প্রহরী নিযুক্ত করেন। আমার কাছে এক আগমনকারী এসে ওই মাল থেকে কিছু কিছু করে উঠিয়ে নিয়ে সে তার চাদরে জমা করতে থাকে। আমি তাকে ধরে ফেলি এবং বলি, তোমাকে আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে যাব। সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি খুবই অভাবী লোক। তখন আমি তাকে ছেড়ে দিই। সকালে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার রাতের বন্দী কী করেছিল? আমি বলি, হে আল্লাহর রসুল! সে তার ভীষণ অভাবের অভিযোগ করায় তার প্রতি আমার দয়া হয়, তাই আমি তাকে ছেড়ে দিই। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবার আসবে। আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায় বুঝলাম, সে সত্যই আবার আসবে। আমি প্রহরা দিতে থাকলাম। সে এলো এবং খাদ্য ওঠাতে থাকল। আমি আবার তাকে ধরে ফেলে বললাম, তোমাকে আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে যাবে। সে আবার ওই কথাই বলল, আমাকে ছেড়ে দিন, আমি খুবই অভাবী। তার প্রতি আমার দয়া হলো। কাজেই তাকে ছেড়ে দিলাম। সকালে আমাকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবু হুরায়রা! তোমার রাতের বন্দীটি কী করেছে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রসুল! সে অভাবের অভিযোগ করায় আমি তাকে দয়া করে ছেড়ে দিয়েছি। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবার আসবে। আমি আবার তৃতীয় রাতে পাহারা দিই। অতঃপর সে এসে খাদ্য ওঠাতে থাকল। আমি তাকে বলি, এটাই তৃতীয়বার এবং এবারই শেষ। তুমি বার বার বলছ, আর আসবে না, অথচ আবার আসছ। সুতরাং তোমাকে আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে যাব। তখন সে বলল, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনাকে এমন কতগুলো কথা শিখিয়ে দিচ্ছি যার মাধ্যমে আল্লাহ আপনার উপকার সাধন করবেন। আমি বললাম, ওগুলো কী? সে বলল, যখন আপনি বিছানায় শয়ন করবেন তখন আয়াতুল কুরসি পুরাই পাঠ করবেন। এতে মহান আল্লাহ আপনার রক্ষক হবেন এবং সকাল পর্যন্ত আপনার সামনে কোনো শয়তান আসতে পারবে না। তারা ভালো জিনিসের খুবই লোভী। অতঃপর (আবু হুরায়রা থেকে এ কথাগুলো শোনার পর) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে চরম মিথ্যাবাদী হলেও এটা সে সত্যই বলেছে। হে আবু হুরায়রা! তুমি তিন রাত কার সঙ্গে কথা বলেছ তা কি জান? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, সে শয়তান। বুখারি, ফাতহুল বারি।হজরত নুমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ আসমান-জমিন সৃষ্টির ২ হাজার বছর আগে একটি কিতাব লিখেছেন। সেই কিতাব থেকে দুটি আয়াত নাজিল করা হয়েছে। সেই দুটি আয়াতের মাধ্যমেই সূরা আল-বাকারা সমাপ্ত করা হয়েছে। যে ঘরে তিন রাত এ দুটি আয়াত তিলাওয়াত করা হয় শয়তান সেই ঘরের সামনে আসতে পারে না। তিরমিজি।

লেখক : মুফাসসিরে কোরআন। www.muftitariqulislam.com

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর