শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই

জনগণের মানবাধিকারকে গুরুত্ব দিন

মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মাত্র ১০ দিনেই হাফ সেঞ্চুরির কৃতিত্ব অর্জন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০ দিনে সারা দেশে নিহত হয়েছেন ৫৪ জন মাদক ব্যবসায়ী। গত ২০ দিনের হিসাবে এ সংখ্যা ৬৪। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বন্দুকযুদ্ধে তাদের নিধন করার কৌশলকে তীব্রভাবে সমালোচনা করা হয়েছে সংসদবহির্ভূত প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষ থেকে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ধরনের মাদকবিরোধী অভিযানের বিপক্ষে। মাদক আগ্রাসন দেশের যুবসমাজকে সর্বনাশের শেষ প্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের মানবাধিকারের বদলে যারা মাদকসন্ত্রাসীদের মানবাধিকারের পক্ষে তত্ত্ব হাজির করছেন তাদের উদ্দেশ্য আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশে ব্যবহৃত মাদকদ্রব্যের সিংহভাগ আসে মিয়ানমার থেকে। দুই দেশের ২৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের বৃহৎ অংশ দুর্গম এলাকা হওয়ায় মাদক পাচারের রুট হিসেবে এসব এলাকা ব্যবহার করা হয়। কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে উৎপাদন করা হয় গাঁজা ও হেরোইনের কাঁচামাল পপি। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মাদক হিসেবে ইয়াবার আগ্রাসন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। সরকারি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে মাদকাসক্ত মুক্ত হতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর মধ্যে ৮০ শতাংশ ইয়াবায় আসক্ত। ইয়াবার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চললেও এর আগ্রাসন থেমে নেই। নানাভাবে রাজধানীতে এর চালান ঢুকছে। নদী, সড়ক ও রেলপথ— এ তিন পথেই ইয়াবা আনছে শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেট। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান নানা কৌশলে ঢাকায় আসছে। ইয়াবা মস্তিষ্ককে চরমভাবে উদ্দীপ্ত করে। সেবন করলে তত্ক্ষণাৎ হৃত্স্পন্দন, রক্তচাপ ও শরীরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং মস্তিষ্কের কিছু কোষের তাত্ক্ষণিক মৃত্যু ঘটে। এ মাদক সেবনে হৃত্দুর্বল ব্যক্তিদের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সহিংস যৌনতাও ইয়াবা সেবনের একটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্ত ব্যবস্থার যে বিকল্প নেই তা অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতায় স্পষ্ট। মাদক ব্যবসায়ীদের টাকার কাছে যে দেশের প্রায় সবকিছু মাথা নত করে, তাদের হাত থেকে জাতিকে রক্ষায় শক্ত পথের কোনো বিকল্প নেই। দেশবাসীর মানবাধিকার রক্ষার সেটিই প্রকৃষ্ট পথ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর