মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

ট্রেন বাস লঞ্চের টিকিট

ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট সে তরী

স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন দেশের সিংহভাগ মানুষের অভ্যাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বভাবতই রাজধানীর ৬০ লাখেরও বেশি মানুষ উন্মুখ হয়ে ওঠে ঈদে ঘরে ফেরার আকুতি নিয়ে। যারা গত তিন দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন তাদের একাংশকে হতাশ হতে হয়েছে। অনেকেই টিকিটের জন্য লাইন দিয়েছিলেন আগের দিন বিকাল কিংবা ইফতারের পর থেকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকের ভাগ্যে টিকিট জোটেনি। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে চলতি বছর তুলনামূলক সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হলেও চাহিদার তুলনায় সিট সংখ্যা সীমিত হওয়ায় অনেকেই হতাশ হচ্ছেন। রেলওয়ে-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদার বিপরীতে রেলওয়ের সক্ষমতা খুবই কম। ফলে সবাইকে টিকিট দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এ বক্তব্যে পুরো সত্যের প্রকাশ ঘটেছে এমন কথা বলার সুযোগ অবশ্য কম। মূলত ঈদে ট্রেনের টিকিট পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে কোটার কারণে। সুবিধাভোগীদের পকেটেই চলে যায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক টিকিট। অভিযোগ রয়েছে, ঈদ উপলক্ষে সরকারের নানা পর্যায়ের কর্তাব্যক্তি অগ্রিম টিকিটের তদবির করেন। যে তদবির অগ্রাহ্য করা রেলের কর্তাব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ নয়। রেলওয়ের অনেকেই ঈদ উপলক্ষে টিকিট কালোবাজারিতে যুক্ত হন। এসব কারণেই ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব টিকিট হাওয়া হয়ে যায়। রেলওয়ের টিকিট কিনতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়েও হাজার হাজার মানুষের টিকিট না পাওয়া ছিল গত কদিনের সাধারণ চিত্র। একই ঘটনা ঘটছে সড়ক ও জলপথেও। বাসের কাউন্টারে টিকিট পাওয়া না গেলেও বেশি দাম দেওয়া হলে কালোবাজারিদের কাছ থেকে সহজেই টিকিট মিলছে। এজন্য অবশ্য দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ কিংবা তার চেয়ে বেশি অর্থ। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন আমাদের দেশে ঐতিহ্যের অংশ। সারা বছর শহর-নগর বা রাজধানীতে কর্মরত মানুষের বড় অংশ শুধু ঈদ উপলক্ষেই স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পান। স্বভাবতই ঈদে পরিবহন সংকট নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়ায়। এ সংকট কিছু মানুষের পকেট স্ফীত করার সুযোগ সৃষ্টি করে। মানুষের দুর্ভোগ কারও কারও কাছে কাম্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়; যার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর