বুধবার, ৬ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (রা.)

ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান ইবনে আফফান ৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে মক্কার ঐতিহ্যবাহী কোরাইশ বংশের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

আল ইসতিয়াবের বর্ণনানুসারে ‘আমুল ফিল’-এর ছয় বছর পরে অর্থাৎ ৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ‘আফফান’ ও মায়ের নাম আরওয়া বিনতে কোরাইশ। হজরত ওসমান (রা.)-এর বংশপরম্পরা পঞ্চম পুরুষ ‘আবদে মানাফ’-এ গিয়ে রসুলে করিম (সা.)-এর বংশধারায় মিলিত হন।

তিনি ছিলেন মধ্যমাকৃতির অত্যন্ত সুদর্শন। ইবনে আসাকির আবদুল্লাহ ইবনে হাজাম মাজেনি থেকে একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘হজরত ওসমান অপেক্ষা সুদর্শন কোনো পুরুষ আমি দেখিনি।’ হজরত ওসমান (রা.)-এর জীবনের প্রাথমিক অবস্থার ইতিহাস খুব সামান্যই সংরক্ষিত আছে। তবে যতটুকু জানা গেছে, জাহেলিয়াতের যুগে জন্ম হলেও জাহেলিয়াতের বীভৎসতা তাঁর চরিত্রকে কলুষিত করতে পারেনি।

ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি ছিলেন হানিফ ঘরানার লোক। যাঁরা নিজের বিবেকের নির্দেশনায় খারাপ কাজ থেকে বিরত থেকেছেন। তিনি ছিলেন আরবের মুষ্টিমেয় শিক্ষিত লোকের একজন। তিনি ছিলেন কোরাইশ বংশের অন্যতম কুস্তিবিদ্যা বিশারদ। কোরাইশদের প্রাচীন ইতিহাস বিষয়েও তিনি ছিলেন গভীর জ্ঞানের অধিকারী। বংশীয় আভিজাত্যের ধারায় যৌবনে তিনি ব্যবসায় নিয়োজিত হন। সর্বোচ্চ সততা ও বিশ্বস্ততার দরুন অল্প সময়েই তিনি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন।

বিপুল ধন-ঐশ্বর্যের কারণে তিনি ‘গনি’ উপাধি লাভ করেন। মমতা, সহনশীলতা, আত্মমর্যাদাবোধ, দান ও লজ্জা ছিল তাঁর মহৎ চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ ছাড়াও তিনি আশারায়ে মুবাশশারা’র একজন এবং সেই ছয়জন সাহাবির মধ্যে অন্যতম যাদের ওপর রসুল (সা.) আমরণ সন্তুষ্ট ছিলেন।

ওসমানের কুনিয়া আবু আমর, আবু আবদিল্লাহ, আবু লায়লা। তার উপাধি যুন-নূরাইন এবং যূল-হিজরাতাইন। তার পিতা আফফান এবং মাতা আরওরা বিনতু কোরাইশ। তিনি কোরাইশ বংশের উমাইয়্যা শাখার সন্তান ছিলেন। তার ঊর্ধ্ব পুরুষ আবদে মান্নাফে গিয়ে মুহাম্মদের বংশের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তার নানী বায়দা বিনতু আবদিল মুত্তালিব ছিলেন রসুল (সা.) এর ফুফু।

ইসলাম গ্রহণের পর মুহাম্মদ তার কন্যা রুকাইয়্যার সঙ্গে তার বিয়ে দেন। হিজরি দ্বিতীয় সনে তাবুক যুদ্ধের পরপর মদিনায় রুকাইয়্যা মারা যায়। এরপর নবী তার দ্বিতীয় কন্যা উম্মু কুলসুমের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। এ কারণেই তিনি মুসলিমদের কাছে যুন-নূরাইন বা দুই জ্যোতির অধিকারী হিসেবে খ্যাত। তবে এ নিয়ে কিছু মতভেদ রয়েছে। যেমন ইমাম সুয়ূতি মনে করেন ইসলাম গ্রহণের আগেই ওসমানের সঙ্গে রুকাইয়্যার বিয়ে হয়েছিল। তবে অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা এ ধারণা পরিত্যাগ করেছেন।

সর্বশেষ খবর