শিরোনাম
শনিবার, ৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি

ওদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে পরিবহন চাঁদাবাজি যেন ঈদের অনুষঙ্গ হতে চলেছে। প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে শুরু হয় চাঁদাবাজির মচ্ছব। এ বছর চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা চাঁদাবাজদের খুব একটা নিরস্ত করতে পারেনি। ঈদ বোনাসের নামে সমানেই চলছে চাঁদাবাজি। পরিবহন শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন, পুলিশ ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা একে অপরের সহযোগী হয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত। চাঁদাবাজদের কাছে অসহায়বোধ করছে যানবাহন চালক, মালিকসহ এ পেশার সংশ্লিষ্টরা। পরিবহন চাঁদাবাজি আমাদের দেশে একটি ওপেন সিক্রেট বিষয়। রাজনৈতিক সরকারগুলোর আমলে সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের মদদে এ চাঁদাবাজি চলে বেপরোয়াভাবে। তত্ত্বাবধায়ক কিংবা শক্ত কোনো সরকার ক্ষমতায় এলে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও হ্রাস পায়। তবে এদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া বা চাঁদাবাজমুক্ত পরিবহন সেক্টরের কথা চিন্তায় আনাও দায়। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর চাঁদাবাজি চরমে ওঠে। ঈদ বকশিশ, ঈদ বোনাস, হরেক নামে চলে চাঁদাবাজি। প্রতিটি এলাকার রাজনীতিবিদরা ঈদ বোনাসের জন্য হাত পাতেন পরিবহন সেক্টরে। ঈদের দোহাই দিয়ে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও পুলিশের বাড়তি চাঁদার দাবি তো আছেই, এর বাইরে রয়েছে বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসী, মাস্তান এবং রাজনৈতিক নেতা নামধারী টাউটদের আবদার। পরিবহন চাঁদাবাজির কারণে ঈদে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা ছাড়া গত্যন্তর থাকে না— এমন দাবি মালিকপক্ষের। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতেও ইন্ধন জোগাচ্ছে এই চাঁদাবাজি। পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলো মুখে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলেও তারা নিজেরাও চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে যারা, তাদের সিংহভাগের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ নয়। পেশাদার সন্ত্রাসীরা পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নিয়ন্ত্রক হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধের আশা দূরাশায় পরিণত হচ্ছে। চাঁদাবাজির যে কোনো ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ যাত্রী কিংবা পণ্য ক্রেতারা।  পরিবহন মালিকরা তাদের দেওয়া চাঁদা সুদে-আসলে আদায় করে তাদের কাছ থেকে। এ ব্যাপারে সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, পরিবহন শ্রমিক ও মালিক— সবাইকে আত্মশুদ্ধির পথে এগোতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর