মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

আগাম বন্যার ছোবল

নদ-নদীর পানির ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দেশের বেশকিছু এলাকায় বন্যা ছোবল হেনেছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলোয় ঈদের আনন্দ কিছুটা হলেও ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে। যে তিস্তা কদিন আগে ছিল পানিশূন্য টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলে হুহু করে পানি বাড়ছে সেখানে। ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। ভারি বর্ষণের ফলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে পানি বেড়েছে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী নদীর আটটি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে ২৪ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে শতাধিক মাছের ঘের ও ফসলি জমি। খাগড়াছড়ি জেলা শহর, রামগড় ও দীঘিনালা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও মানুষের দুর্ভোগ রয়েই গেছে। মৌলভীবাজারে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তিন ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি কমলেও জেলার অন্য নদীগুলোর পানি বেড়েই চলেছে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারে মনু নদ ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এতে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের ১২টি স্থান ভেঙে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। সাতক্ষীরার আশাশুনিতে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে একটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিতে তলিয়ে গেছে শতাধিক মত্স্য ঘের ও ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বিপুলসংখ্যক পরিবার। এ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে আগাম বন্যা ছোবল হেনেছে তাতে জনমনে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই বন্যার করাল গ্রাসে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ভরা বর্ষা মৌসুমে কী বিপদ সৃষ্টি হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছে বিভিন্ন জনপদের মানুষ। প্রশাসন বন্যাকবলিত মানুষের কাছে দ্রুত ছুটে যাওয়ায় এবং বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার ও ত্রাণকাজে সেনাবাহিনী ব্যবহৃত হওয়ায় দুর্গতদের কষ্ট লাঘবে তা ভূমিকা রেখেছে। আমরা আশা করব, চলতি বছর বন্যাজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি রাখা হবে। সাংবাৎসরিক বন্যার ধকল এড়াতে নদ-নদীর পানির ধারণক্ষমতা বাড়াতে ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে— এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর