মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

প্রথম সেলিম

১৫১২ খ্রিস্টাব্দে বায়েজিদ সিংহাসন ত্যাগ করলে ৪৭ বছর বয়সী তার ছোট ছেলে প্রথম সেলিম তুর্কি সাম্রাজ্যের সুলতানরূপে অভিষিক্ত হন। ক্ষমতা লাভ করে তিনি সর্বপ্রথম তার বিদ্রোহী ভাইদের ষড়যন্ত্র নস্যাতের সংকল্প করেন। সেলিমের দুই বড় ভাই খোরকন্দ ও আহমদ সিংহাসন দাবি এবং এশিয়া মাইনরে কর্তৃত্ব বিস্তার করে বিদ্রোহ করেন। ব্রুসায় এ বিদ্রোহ শুরু হয় এবং সুলতান প্রথমে খোরকন্দকে বন্দী ও হত্যা করেন। তার ভাতিজাদেরও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এদিকে আহমদ আরমেনিয়ার শাসনকর্তা ছিলেন এবং সমগ্র আনাতোলিয়ায় স্বীয় প্রভুত্ব কায়েম করে ভাইয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেন। এশিয়া মাইনরে দ্রুত সমরাভিযান করে সেলিম আহমদকে পরাজিত করেন। আহমদ পারস্যের শিয়া সুলতান শাহ ইসমাইলের সাহায্য প্রার্থনা করেন। দুর্ভাগ্যবশত আহমদ সেলিমের হাতে বন্দী ও নিহত হন। এর ফলে সিংহাসন নিষ্কণ্টক হয় এবং সেলিম তার রাজ্য সুদৃঢ় করার প্রয়াস পান।

যুদ্ধের কারণ : সেলিম তুর্কি সুলতানদের মধ্যে বিশেষ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শাসক ও যোদ্ধা ছিলেন। তিনি উপলব্ধি করেন, কেবল ইউরোপ ভূখণ্ডে সাম্রাজ্য বিস্তারে তুর্কি সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধি নিহিত নয়। কারণ আব্বাসীয় খিলাফতের পতনে মধ্য এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় যে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। বলা বাহুল্য, তুর্কি সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে ভৌগোলিক সীমারেখা সুনিশ্চিতরূপে নির্ধারণ এবং মোঙ্গল আক্রমণ ও হালাকু খানের ধ্বংসলীলায় ধূলিসাত্প্রাপ্ত আরব রাজনৈতিক সংগঠনের অবর্তমানে বিরাজমান শূন্যতা পূরণের জন্য তুর্কিরা বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মূলত আরবরা তুর্কিদের মতো এমন কোনো রাজনৈতিক ও সামরিক কাঠামো নির্মাণ করেনি যা হালাকু খানের আক্রমণের পরও বেঁচে ছিল। আশ্চর্যের বিষয়, তৈমুরের আক্রমণ তুর্কিদের ইতিহাসে ছিল একঝলক জলোচ্ছ্বাসের মতো। কারণ তাদের বিজয়ের পরে তুর্কিদের রাজনৈতিক কাঠামো, সমাজ ও সংস্কৃতি অবলুপ্ত হয়নি। এর ফলে প্রাইসের মতে, ‘ভয়ঙ্কর সেলিম’ পুব দিকে রাজ্য সম্প্রসারণ করেন। আরবদের অন্তর্ধানে পূর্ব পারস্যে শিয়া সাফাতি বংশ রাজ্য প্রতিষ্ঠা এবং মিসরে মামলুক (দাস) বংশ আধিপত্য বিস্তার করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর