শুক্রবার, ২২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

গডফাদারদের ধরতে আইন

মাদকবিরোধী লড়াই জোরদারে অবদান রাখবে

মাদকবিরোধী লড়াইয়ে রাঘববোয়ালরা যাতে পার না পায় তা নিশ্চিত করতে তাদের ছাই দিয়ে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। চলমান লড়াইয়ে সাধারণ মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা সম্ভব হলেও রাঘববোয়ালদের ঘাড়ে হাতই পড়েনি। ফলে মাদকবিরোধী লড়াইয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে কোনো কোনো মহল। তবে প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন, মাদক ব্যবসায় জড়িতদের পরিচয় যাই হোক তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক ব্যবসার মূল হোতাদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছেন, বিদ্যমান আইনে কোনো ব্যক্তির দখলে মাদকদ্রব্য পাওয়া না গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ কম। এ জন্য মাদক ব্যবসায় জড়িত মাস্টারমাইন্ডরা সহজেই পার পেয়ে যায়। তাই মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাকারী ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হচ্ছে। আইনে মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতাকারী ও মাদকের গডফাদারসহ মাদক সিন্ডিকেট চক্রকে সর্বোচ্চ শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাদক অপরাধসংক্রান্ত মামলার বিচার কার্যক্রম আলাদা কোনো আদালতের মাধ্যমে পরিচালনার বিষয়টি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখছে। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সাফ সাফ বলে দিয়েছেন, মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যাতে মাদকের প্রতি আকৃষ্ট না হয় সে জন্য এর কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। মাদক ব্যবসার মূল হোতা তথা গডফাদার ও মাস্টারমাইন্ডদের শাস্তি নিশ্চিত করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ প্রণয়নের উদ্যোগ মাদকবিরোধী লড়াই জোরদার করতে অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। মাদক ব্যবসার বদৌলতে যারা দেশের মানুষকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়ে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে তাদের আইনের আওতায় আনতে এ আইন কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস। পাশাপাশি মাদক সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারে পৃথক আদালত গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়টিও আশাজাগানিয়া ঘটনা।  মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই সফল হলে দেশকে শুধু মাদকমুক্ত নয়, অপরাধমুক্ত করার ক্ষেত্রে তা অবদান রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর