শুক্রবার, ২২ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হুদাইবিয়া সন্ধির শর্তাবলী

মুন্সি জামিল উদ্দিন

হুদাইবিয়ার সন্ধি ইসলামের ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।  ষষ্ঠ হিজরিতে মুসলমানরা হজ করতে গেলে মক্কার কোরাইশরা তাতে বাধা দেয়। এ অবস্থায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় মুসলমানরা। এ পরিস্থিতিতে কোরাইশরা সন্ধি করতে প্রস্তুত হলো এবং এ সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য সুহাইল বিন আমরকে দূত বানিয়ে পাঠাল। তার সঙ্গে দীর্ঘ সময়ব্যাপী আলোচনা হলো এবং শেষ পর্যন্ত সন্ধির শর্তাবলি স্থিরিকৃত হলো। সন্ধিপত্র লেখার জন্য হজরত আলী (রা)-কে ডাকা হলো। সন্ধিপত্রে যখন লেখা হলো ‘এই সন্ধি আল্লাহর রসুল মুহাম্মদ (সা.)-এর তরফ থেকে তখন কোরাইশ প্রতিনিধি সুহাইল প্রতিবাদ জানিয়ে বলল : ‘আল্লাহর রসুল’ কথাটি লেখা যাবে না; এ ব্যাপারে আমাদের আপত্তি আছে।’ এ কথায় সাহাবিদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হলো। সন্ধিপত্র লেখক হজরত আলী (রা.) কিছুতেই এটা মানতে রাজি হলেন না। কিন্তু হজরত (সা.) নানাদিক বিবেচনা করে সুহাইলের দাবি মেনে নিলেন এবং নিজের পবিত্র হাতে ‘আল্লাহর রসুল’ কথাটি কেটে দিয়ে বললেন : ‘তোমরা না মানো, তাতে কি? কিন্তু খোদার কসম, আমি তাঁর রসুল।’ এরপর নিম্নোক্ত শর্তাবলির ভিত্তিতে সন্ধি-চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো :

১. মুসলমানরা এ বছর হজ না করেই ফিরে যাবে।

২. তারা আগামী বছর আসবে এবং মাত্র তিন দিন থেকে চলে যাবে।

৩. কেউ অস্ত্রপাতি নিয়ে আসবে না। শুধু তলোয়ার সঙ্গে রাখতে পারবে: কিন্তু তাও কোষবদ্ধ থাকবে, বাইরে বের করা যাবে না।

৪. মক্কায় যেসব মুসলমান অবশিষ্ট রয়েছে, তাদের কাউকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। আর কোনো মুসলমান মক্কায় ফিরে আসতে চাইলে তাকেও বাধা দেওয়া যাবে না।

৫. কাফের বা মুসলমানদের মধ্য থেকে কেউ মদিনায় গেলে তাকে ফেরত পাঠাতে হবে।  কিন্তু কোনো মুসলমান মক্কায় গেলে তাকে ফেরত দেওয়া হবে না।

৬. আরবের গোত্রগুলো মুসলমান বা কাফের যে কোনো পক্ষের সঙ্গে সন্ধিচুক্তি সম্পাদন করতে পারবে।

৭. এ সন্ধি-চুক্তি ১০ বছরকাল বহাল থাকবে।

 

সর্বশেষ খবর