মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান

বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কাম্য

রোহিঙ্গা সংকট উত্তরণে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সবচেয়ে মর্যাদাবান দুটি বিশ্বসংস্থা জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে তারা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মহানুভবতার প্রশংসা করেছেন। বৈঠককালে তারা রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে এ সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হওয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব ও বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। ১৯৭৭ সাল থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে চলে আসায় উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কেবল মানবিক কারণে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করেছে, কেননা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতে শরণার্থী হিসেবে অনুরূপ আশ্রয় গ্রহণের অভিজ্ঞতা এ দেশের জনগণেরও রয়েছে। সরকার প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে একটি দ্বীপে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে তারা জীবনযাপনের জন্য আরও ভালো অবস্থা পাবে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সম্পাদিত সমঝোতার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার এর বাস্তবায়নে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বৈঠক শেষে অ্যান্তোনিও গুতেরেস ও জিম ইয়ং কিম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন। তারা বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলোর একটি। প্রতিবেশী দেশের ১১ লাখ মানুষকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে মানবিক কারণে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের ঢালাও প্রশংসা ছাড়া সংকটের সমাধানে বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো শক্তভাবে এগিয়ে আসেনি। জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক শুধু নয়, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে। মানবিকতার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বছরের পর বছর ধরে ভুগবে তা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর