শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার আগ্রাসন

মশা নিধনের উদ্যোগ নিন

রাজধানীতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার আগ্রাসন চলতি বছর ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খোদ স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার এক জরিপে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের ৯৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৭টিকে এডিস মশা বিস্তারে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপে ঢাকা উত্তরের ২৫ ও দক্ষিণের ৪২টি ওয়ার্ডে এডিস মশার প্রজনন ও বিস্তারের নমুনা-লক্ষণ মিলেছে। দুই অংশের অনেক আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক এলাকা, বিভিন্ন ধরনের সরকারি-বেসরকারি দফতরও ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রয়েছে। এসব এলাকার নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদ, পরিত্যক্ত গাড়ির টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, বালতি, ফুলের টব, স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে এডিস মশার বংশ বিস্তারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু ও তাপমাত্রার পরিবর্তন এডিস মশার বংশ বিস্তারে প্রভাব রাখছে। বর্ষাকাল আমাদের দেশে এই মশার জন্য প্রজননবান্ধব। চলতি বছর আগের চেয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে মশা নিধনের যে পদ্ধতি বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, তার কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রশ্ন রয়েছে। কেবল ওপরে স্প্রে করলেই হবে না, একই সঙ্গে পানির স্তরেও লার্ভা ও পিউপা নিধনে তরল কীটনাশক ব্যবহারে জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে। স্মর্তব্য, গত বছর ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া মৌসুমে রাজধানীতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৫৯ জন। এ বছর জুন-জুলাইয়ে ছয়জন ও গত জানুয়ারিতে একজন মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবেই ৯০০-এর বেশি। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। বর্ষা মৌসুমজুড়ে আরও বিপুলসংখ্যক মানুষ এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে রাজধানীজুড়ে মশা নিধন অভিযান যেমন জোরদার করা দরকার তেমন নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। শেষোক্ত ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকায় এডিস মশার আগ্রাসন বাড়ছে। রাজধানীতে কারও জ্বর হলেই রোগী নয়, স্বজনদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে আতঙ্ক; যার অবসানে কর্তৃপক্ষকে এখনই মশা নিধন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর