বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া কঠিন

মেজর মো. আখতারুজ্জামান (অব.)

বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া কঠিন

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে হলে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এই মুহূর্তে দেশমাতা খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ছাড়া দলের অন্য কোনো সিদ্ধান্ত দলকে ব্যাপকভাবে আলোড়িত করবে না। বিশেষ করে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা দেশমাতার মুক্তি আন্দোলনের বাইরে দলের অন্য কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে চাইবে না।  দলের চলমান নেতৃত্বও দেশমাতার মুক্তি আন্দোলনের বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও চিন্তা করছে না। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আইনগতভাবে দলের আইনজীবীরা তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা করেও দেশমাতাকে আইনের মাধ্যমে মুক্ত করে আনতে পারেননি। দলের ডাকসাইটে আইনজীবীরা সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে প্রচণ্ডভাবে মার খেয়েছেন। দেশমাতার বিরুদ্ধে আনীত মামলাটির কোনো সত্যতা নেই। জনগণ বিশ্বাস করে এটি একটি সাজানো রাজনৈতিক মামলা। সরকার দেশমাতা খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত আক্রোশে হয়রানি ও ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এ দুর্নীতি মামলাটি করেছে। কিন্তু সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রিত করে দেশমাতাকে কারারুদ্ধ করতে পেরেছে। সেই সঙ্গে সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল দেশের উচ্চ আদালতকেও সরকারের পক্ষে রাখতে চমৎকারভাবে সফলতা দেখিয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিচারব্যবস্থা যে পর্যায়ে আছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে আইনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্ত করে আনা সম্ভব হবে না।

আদালতের চৌকাঠ থেকে ব্যর্থতার পরে দেশমাতা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে দৃশ্যমান পথ হলো রাজপথে ব্যাপক গণআন্দোলন সৃষ্টি করা। যদি তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলতে না পারা যায় তাহলে তাকে মুক্ত করে আনা যাবে না। এ সরকারের মেয়াদ আগামী জানুয়ারি ২০১৯ সালে শেষ হবে। অক্টোবরের পরে নির্বাচন কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। সরকার তখন সবকিছু নির্বাচনমুখী করে ফেলবে। রাজনীতির মাঠের খেলোয়াড়েরা সবসময় নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে থাকে। কাজেই ওই সময় দেশমাতার মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। তাই যে কোনো মূল্যে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতেই হবে। একটি কার্যকরী সফল গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য কোনো উপকরণই এখন প্রস্তুত নয়। বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা এ যাবৎকালের সর্বাপেক্ষা দুর্বল। দেশের কোথাও শক্তিশালী সংগঠন নেই। জেলা-উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও তথাকথিত সুপার ফাইভের সঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কোনো বন্ধন নেই। টাকা বা সুযোগ-সুবিধা ছাড়া কেউ তাদের আহ্বানে কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে না। দলের নেতা-কর্মীদের লম্বা লম্বা তালিকা আছে কিন্তু তারা সম্পূর্ণ অসংগঠিত। উপদলীয় এবং ব্যক্তিগত কোন্দলে জর্জরিত।

যে কোনো আন্দোলনের মূল শক্তি ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠন। দলের ছাত্র সংগঠনের অবস্থা চরম বিপর্যস্ত। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্ররা এখন আর দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। সব অছাত্র এখন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের কোনো প্রভাব নেই। ছাত্রদলের ডাকে একটি মাদ্রাসার ছেলেরাও এখন বের হয়ে আসে না। অছাত্ররা নেতৃত্বে থাকায় অনেক ছাত্রনেতাই বিভিন্ন সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। অনেকেই পুলিশের খাতায় অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত। তাদের পক্ষে অবাধে চলাফেরাও বাধাগ্রস্ত হয়। আন্দোলনের শুরুতেই পুলিশ অছাত্র নেতাদের ওপর চড়াও হয়, ফলে আন্দোলনের ওপর জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ছাত্রদলে অছাত্র নেতাদের আধিপত্য বেশি থাকায় ধর্মীয় ভাবাপন্ন ও বিভিন্ন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক আদর্শের ছাত্র ও যুবকরা মূল চরিত্র বা আদর্শ গোপন করে ব্যাপক হারে ছাত্রদলে অনুপ্রবেশ করেছে। এদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সদ্ভাব বা ভালো সম্পর্ক নেই। ফলে দলের আন্দোলনে বা কর্মসূচিতে তাদের জোরালো ভূমিকা থাকে না। উল্টো দলের যে কোনো কর্মসূচিতে অযাচিত সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তারা কর্মসূচিকে বানচাল করে দেয় এবং দলের সাধারণ নেতা-কর্মীদের বিপদে ফেলে দেয়। এসব অছাত্র নেতার অপকর্মে আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের পুলিশি নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।

যে কোনো আন্দোলনের একটি অন্যতম বড় শক্তি হলো বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমিক সংগঠন। সাধারণত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবং শিল্প-কারখানার সিবিএ বা ট্রেড ইউনিয়ন খুবই প্রভাব ও ক্ষমতাশালী। প্রায় প্রতিটি ট্রেড ইউনিয়নেরই রাজনৈতিক আদর্শ এবং বিশ্বাস থাকে। কর্মজীবী বা শ্রমিক সংগঠনগুলো তাদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা অনুযায়ী তাদের সংগঠনগুলো সাধারণত পরিচালনা করে। প্রতিনিয়ত পেশাজীবী ও শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে মালিক তথা সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করতে হয় বিধায় এ ধরনের সংগঠনগুলো সরকারবিরোধী হয়ে থাকে। কর্ম ও শ্রমজীবীদের সঙ্গে দেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি সরাসরি জড়িত, ফলে সরকারকে সব সময় তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হয়। দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা সম্পূর্ণভাবে কর্ম ও শ্রমজীবীদের অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। এমনকি সরকারের অস্তিত্বও কর্মজীবী ও শ্রমজীবীদের মন মর্জির ওপর অনেকটা নির্ভর করে। সরকার দেশের শ্রমজীবীদের বেসরকারি ও ব্যক্তিগত খাত চাঙ্গা থাকার কারণে ভালো সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে সন্তুষ্ট রাখতে পেরেছে। যার ফলে দেশে তেমন কোনো আশঙ্কাজনক গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে না। বিদেশে শ্রম রপ্তানি করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের কারণে দেশে ব্যাপক বেকারত্ব থাকার পরেও কোনো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে না। মূল কারণ হলো একজন প্রবাসী কর্মজীবী যে পরিমাণ আয় করছে তার ওপর তার পরিবাবের ৮-১০ জন নির্ভরশীল হতে পারছে। প্রবাসীর ছেলে, মেয়ে, ভাই, বোন, শ্যালক, শ্যালিকা, এমনকি বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি দিব্বি কাজ না করেও দিন কাটিয়ে দিচ্ছে। তাই শ্রমবাজারে অতিরিক্ত কোনো চাপ সৃষ্টি হচ্ছে না। এ সুযোগটি অন্য কর্ম ও শ্রমজীবীরা নিচ্ছে, যার ফলে শুধু কর্মক্ষম অদক্ষ একজন সাধারণ শ্রমিকও দিনে ৩০০ টাকা রোজগার করতে পারছে, যা প্রায় আট কেজি চালের মূল্যের সমান। ফলে এ অদক্ষ শ্রমিকের মনেও তেমন বড় ধরনের কোনো অসন্তুষ্টি নেই। সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমুখী কার্যক্রম দেশের হতদরিদ্র মানুষগুলোকে গৃহত্যাগী করছে না, ফলে তারা শহরমুখী তেমন হচ্ছে না। সরকারের গ্রামমুখী বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যক্রমের কারণে দুর্নীতি গ্রাম পর্যায়ে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে দেশে আদর্শবাদী যুবশক্তির প্রচণ্ড অবক্ষয় হয়েছে। একদিক দিয়ে তারা রাষ্ট্রের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে এবং পাশাপাশি অতি দ্রুত নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের নেশায় বিভিন্ন অপকর্ম ও অপসংস্কৃতিতে জড়িত হচ্ছে। এ আদর্শহীন দিগভ্রান্ত যুবসমাজ জনকল্যাণমুখী রাজনীতিতে না এসে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী ও সুযোগসন্ধানী দুর্নীতিবাজ গণস্বার্থবিরোধী অপরাজনীতিতে জড়িয়ে আকর্ষিত হচ্ছে। ওরা ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও তোষামোদি রাজনীতির ধারক হয়ে যাচ্ছে, যার ফলে সুষ্ঠু রাজনীতির বিকাশ তথা গণআন্দোলনের পথ দুরূহ করে দিচ্ছে। সরকার তার কায়েমী স্বার্থে এ অপরাজনীতির সুযোগ নিচ্ছে যদিও চূড়ান্ত পর্যায়ে এর চরম মূল্য সরকারকেই দিতে হবে।

যে কোনো আন্দোলনের আরেকটি বড় নিয়ামক শক্তি হলো পর্দার আড়ালে ব্যবসায়ী তথা পুঁজিপতিরা। গত ২০ বছরে সমাজে ব্যাপক বিবর্তন হয়েছে। কিছু মানুষ যেমন চরম দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে গেছে তেমনি সমাজের একটি অংশ বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছে। এটি সত্যি এ বিশাল বিত্তশালীদের কল্যাণে দেশের অতি দরিদ্রদের দেখা যায় না যারা মূলত বেঁচে আছে বিভিন্ন দয়া-দাক্ষিণ্যের কারণে। যাই হোক, সন্দেহ নেই দেশে একটি অতি ক্ষমতাধর পুঁজিপতিদের বিকাশ হয়েছে। এ পুঁজিপতিরা রাজনীতির সবচেয়ে বড় নিয়ামক শক্তি। পুঁজিপতিরাই নির্ধারণ করে রাজনীতি। সরকার তাদের ক্রীড়নক। যতদিন পর্যন্ত সরকার পুঁজিপতিদের পক্ষে থাকবে ততদিন পর্যন্ত কোনো বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি সরকারের বিপক্ষে দাঁড়াতে পারবে না। পুঁজিপতিরা শুধু সরকার নয়, সামরিক, বেসামরিক সব শক্তি, প্রশাসন, পুলিশ, বিচারব্যবস্থা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি বিরোধী দলের রাজনীতিও নিয়ন্ত্রিত হয় পুঁজিবাদীদের দ্বারা। চাঁদা ছাড়া কোনো রাজনীতি হয় না। বর্তমান সরকার পুঁজিবাদীদের পক্ষের সর্বোত্তম সরকার। এ সরকারের সঙ্গে পুঁজিবাদীদের কোনো বিরোধ নেই। কাজেই কোনো গণআন্দোলন গড়ে ওঠার সম্ভাবনা শূন্যের কোটায়। 

সফল আন্দোলনের জন্য মিডিয়ার সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। বর্তমান মিডিয়া দৃশ্যত সরকারবিরোধী যা তাদের মিডিয়ার প্রচার-প্রচারণা বা কাটতির কারণে। কিন্তু পর্দার অন্তরালে মিডিয়া খুবই সরকারবান্ধব। মিডিয়াও এখন পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে। সরকার তাদের নিজেদের কায়েমী স্বার্থেই মিডিয়াকে যথেষ্ট পরিমাণে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রেখেছে এবং সরকার মিডিয়াকে তার শাসন ক্ষমতার অংশও শেয়ার করছে। সেখানে বিরোধী দলের বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা নেই, ক্ষমতা ভাগাভাগির কোনো আলোচনা নেই, রাজপথের আন্দোলনের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়নি, রাষ্ট্রের নেতৃত্ব কে নেবে বা আন্দোলনই কার নেতৃত্বে হবে, এসব কোনো বিষয়ই এখন পর্যন্ত নির্ধারিত নয়। আন্দোলনের প্রচার-প্রচারণা কী হবে বা মিডিয়ার তাতে কী অবদান থাকবে তা যতক্ষণ পর্যন্ত স্পষ্ট না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত মূল মিডিয়ার সমর্থন বা সহযোগিতা পাওয়া অলীক কল্পনা মাত্র। বর্তমান মিডিয়া কেন এবং কী কারণে সরকারের সঙ্গে তাদের মধুর সম্পর্ক ত্যাগ করে বিরোধী শিবিরে আসবে তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু মিডিয়ার সমর্থন ও সহযোগিতা ছাড়া কখনই আন্দোলন সফল হবে না।

আন্দোলন করেই দেশমাতাকে মুক্ত করে আনতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু জনগণ মনে করে এ অল্প সময়ে আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনা সম্ভব নয়। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আন্দোলন করে দেশমাতা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনার পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। দলের চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে সঠিক তথ্য প্রদান করা উচিত। চেয়ারপারসন নিঃসঙ্গ কারান্তরীণ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশান্তরিত, ফলে দেশের সঠিক চিত্র তাদের কাছে না থাকাই স্বাভাবিক। এখন রূঢ় ও অপ্রিয় বাস্তবতা হলো লন্ডন থেকে দল চালানো বা কোনো গণআন্দোলন গড়ে তোলা যাবে না। এ চরম সত্য কথাটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বলতে হবে। অশোভনীয় হলেও সত্যি যে, যারা বলছেন না তারা জ্ঞানপাপী এবং দল ও দেশমাতার শত্রু। দলের চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি আনুগত্যে কারও কোনো অভাব নেই। তবে সবাই পরস্পর প্রতিযোগী। দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না কিন্তু ভান করছে। মাঠে উপস্থিত একক নেতা ছাড়া কাজের সমন্বয় হবে না। মাঠে একজন একক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা থাকতে হবে। সবাইকে সন্দেহ করলে হবে না।

সবশেষে দায়িত্ব নিয়ে বলতে চাই, আগামী নির্বাচন করব না। তারপরেও দলের সবাইকে অনুরোধ করব, আন্দোলনের সস্তা বুলি বাদ দিয়ে দলকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সরকারের সঙ্গে আলোচনা বা আপস করে নয়। আন্দোলন হিসেবে সরকারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে একক ও একতরফা সিদ্ধান্তে নির্বাচনের জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে।  ক্ষমতায় যাওয়া যাবে কিনা বলা যায় না, তবে এটি নিশ্চিত যে, দল টিকে যাবে, দেশমাতা খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে।

জনগণের শান্তি নিশ্চিত হবে। দলের কর্মীরা গুম, খুন ও পুলিশের নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবে। যদি সংসদে ৫০টি আসনও আমরা পাই তাহলে আওয়ামী লীগ সরকার যতই শক্তিশালী হোক না কেন বিএনপিকে তোয়াজ করেই দেশ চালাতে হবে। নিজেদের বাগাড়ম্ভর ও অসাধ্য সিদ্ধান্ত পরিহার করে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণই নির্ধারণ করে দেবে বাংলাদেশের রাজনীতি। দলের হাজার হাজার কর্মীকে আন্দোলনের নামে জেল-জুলুম-নির্যাতনের দিকে ঠেলে দেওয়া সঠিক রাজনীতি হবে না।  মামলা-হামলায় ও পুলিশের নির্যাতনে কর্মীরা আজকে বিপর্যস্ত। পুলিশের ভয়ে সবাই পালিয়ে বেড়াচ্ছে।  আন্দোলন করতে বিএনপির সব নেতা-কর্মীর সাহস আছে কিন্তু শক্তি ও সক্ষমতা নেই।  এই বাস্তবতা নেতাদের বুঝতে হবে।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য।

সর্বশেষ খবর