শনিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

৪৭ শতাংশই বাল্যবিয়ে

জনসচেতনতা গড়ে তোলার বিকল্প নেই

বাল্যবিয়ে বন্ধে সরকারের এত তোড়জোড় সত্ত্বেও এখনো শতকরা ৪৭ ভাগ মেয়ের বিয়ে হচ্ছে ১৮ বছরের নিচে। ‘বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা-২০১৮’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থার (ইউনিসেফ) তথ্যানুযায়ী বিশ্বের যেসব দেশে বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ তার একটি। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে যখন দুনিয়াজুড়ে সমীহের চোখে দেখা হচ্ছে, তখন এ কলঙ্ক সেই সাফল্যকে যে অনেকটাই নিষ্প্রভ করছে তা সহজেই অনুমেয়। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোরম ইন্টারন্যাশনালের গবেষণা জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশের ৭৩ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় বাল্যবয়সে। সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে শিক্ষা, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে বাল্যবিয়ে হয়। এ ছাড়া চরম দারিদ্র্য, দুর্বল বিচারব্যবস্থা ও আইন প্রয়োগ প্রক্রিয়ার অভাবকে বাল্যবিয়ের কারণ হিসেবে ধরা হয়। বাল্যবিয়ের মচ্ছব বইলেও বাংলাদেশে আইনত বাল্যবিয়ে নিষিদ্ধ ও এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দেশের আইন অনুযায়ী বিয়ের ন্যূনতম বয়স বরের ক্ষেত্রে ২১ আর কনের ক্ষেত্রে ১৮। এর চেয়ে কম বয়সে বিয়ে হলে তা বাল্যবিয়ে বলে বিবেচিত হয় এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধের শামিল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাল্যবিয়ে আইন অনুযায়ী অবৈধ হলেও এ আইনের কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। আইন প্রয়োগের দায়িত্ব যাদের সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এমনকি সংসদ সদস্যদের গাফিলতির কারণেই বাল্যবিয়ে বন্ধে কোনো সাফল্য আসছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতেও বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটছে। বাল্যবিয়ে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের অর্জিত সাফল্যকে নিষ্প্রভ করে তুলছে। প্রসূতিস্বাস্থ্যের জন্য এটি বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করেছে। জনসংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও ফেলছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া। এ আপদ বন্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও সক্রিয় হতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর