সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভবন নির্মাণের নীতিমালা

রাজউকের ভুলত্রুটি শোধরানোও জরুরি

রাজধানীতে যানবাহন চলাচলে যেমন শৃঙ্খলা নেই, তেমন শৃঙ্খলা নেই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও। ভবন নির্মাণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও সিংহভাগ ক্ষেত্রেই তা লঙ্ঘিত হচ্ছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান এরিয়ার জন্য আয়োজিত ‘ডেনসিটি জোনিং’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজধানীর ৭০-৮০ ভাগ লোকই নীতিমালা অমান্য করছে। এ নিয়ম লঙ্ঘনে মহানগরীতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাদের মতে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৯০ শতাংশ এলাকায় ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করে। অতিরিক্ত মানুষের চাপেই সড়কে যানজট, নাগরিক সেবার অবনতিসহ জীবনযাত্রার মান ক্রমেই নিচে নামছে। রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) মিলনায়তনে শনিবার রাজউক ও বিআইপি যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। রাজউক সদস্য আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সেমিনারের আলোচনায় অংশ নেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, নগর বিশেষজ্ঞ স্থপতি ইকবাল হাবিব, রাজউকের ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। গুরুত্বপূর্ণ এই সেমিনারে ভবন নির্মাণে যে বিশৃঙ্খল চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা উদ্বেগজনক। এ জন্য ভবন মালিকরা যেমন দায়ী তেমন রাজউকের কর্মকর্তারাও তাদের দায় এড়াতে পারেন না। রাজধানীতে কেউ ভবন নির্মাণের জন্য রাউজকের দ্বারস্থ হলে তাকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো হয়। হয়রানির পাশাপাশি বড় অঙ্কের অর্থদণ্ডও অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। ফলে অনেকেই রাজউকের কাছ থেকে প্ল্যান পাস করে ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া এড়িয়ে চলতে চান। নিয়ম ভঙ্গ করলে সহজে পার পাওয়া যায় বলে অনুমোদিত প্ল্যান অনুযায়ী ভবন নির্মাণের গরজ অনেকেই অনুভব করেন না। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য চলছে তার অবসানে নাগরিকদের হয়রানির যে চক্র রাজউকে বছরের পর বছর ধরে সক্রিয় তাদের সামাল দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। নগর উন্নয়নে রাজউকের গৃহীত যে কোনো পরিকল্পনার ভুলত্রুটি কীভাবে এড়ানো যায় তা নিশ্চিত করা জরুরি।  রাজধানীর উন্নয়নে রাজউকের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে নিজেদের দোষ-ত্রুটিগুলো আগে খুঁজে বের করতে হবে।  রাজউককে নাগরিকবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর