বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

বোমারু মিজান গ্রেফতার

দেশের জন্য স্বস্তিদায়ক ঘটনা

বাংলাদেশের জেল পলাতক শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গি নেতা শহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান গত সোমবার ভারতের কর্নাটক রাজ্যের রামনগড়া এলাকায় ধরা পড়েছে। এর আগে ৩ আগস্ট তার দুই সহযোগী আটক হয়। বোমারু মিজানকে ধরার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতে বড় অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাকে ধরার জন্য তৎপর হয়ে উঠলেও নিজের পরিচয় গোপন করে এই জঙ্গি নেতা তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। সোমবার বেঙ্গালুরু শহরের ৫০ কিলোমিটার দূরবর্তী রামনগড়ায় তার আস্তানায় হানা দেয় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (এনআইএ) সদস্যরা। বোমা হামলা ও জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে বোমারু মিজান। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে বোমা মেরে ও গুলি করে আরও দুই জঙ্গির সঙ্গে বোমারু মিজানকে ছিনিয়ে নেয় জেএমবি সদস্যরা। অন্য দুই জঙ্গি হলো— মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি ও রাকিবুল হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ। এর মধ্যে হাফেজ মাহমুদকে ওই দিন দুপুরেই টাঙ্গাইলে জনতার সহযোগিতায় পুলিশ ধরে ফেলে। পরে গভীর রাতে তাকে নিয়ে জঙ্গিদের ধরা অভিযানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তার প্রাণ যায়। এনআইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশি নাগরিক বোমারু মিজান ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিক সেজে কর্নাটকের রামনগড়া এলাকায় দুই স্ত্রী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিল। তার এক স্ত্রী বাংলাদেশি; সেও ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে ভারতীয় সেজে দিনের পর দিন ভারতে অবস্থান করছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের বোলপুরে বোমারু মিজানের এই স্ত্রীর নিজস্ব একটা বাড়িও রয়েছে। জেল পলাতক আসামি বোমারু মিজান ২০১৪ সালে ভারতে পালিয়ে যায় এবং সেখানে আস্তানা গাড়ে। ওই বছরের ২ অক্টোবর পশ্চিমবাংলার বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে শাকিল আহমেদ ও সোবহান মণ্ডল নামের দুই জঙ্গি নিহত হয়। সে ঘটনার তদন্তে উদ্ঘাটিত হয় নিহত দুজন জেএমবির সদস্য। খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ মামলার আসামিরা পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানে অস্ত্রশস্ত্র, বোমা তৈরি ও জিহাদি প্রশিক্ষণের সঙ্গে জড়িত ছিল। ভারতের মাটিতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে নাশকতা ঘটানো ও গণতান্ত্রিক সরকারকে উত্খাত ছিল তাদের লক্ষ্য।  বাংলাদেশের জেল পলাতক জঙ্গি নেতা বোমারু মিজান ও তার দুই সহযোগীর গ্রেফতারের ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জন্যই স্বস্তিদায়ক। আমরা আশা করব তাদের অশুভ তৎপরতার স্বরূপ উদ্ঘাটনে দুই দেশের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ চালাবে।  জঙ্গি তৎপরতায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার  ক্ষেত্রে বিষয়টি গুরুত্বের দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর