বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রাজনীতি, জাতীয় নির্বাচন ও গণতন্ত্র

মো. রিয়াজুল হক

কোনো এক ঝরনার ধারে একটি হরিণ শাবক পানি পানরত অবস্থায় এক বাঘ হরিণ শাবকটিকে শিকার করতে উদ্যত ঠিক সেই মুহূর্তে একটি সিংহ সেই স্থানে উপস্থিত হওয়ায় বাঘ সিংহের ভয়ে পালিয়ে গেল। এতে কি হরিণ শাবকের কোনো লাভ হয়েছে? আমার এ প্রশ্নটি বিশেষ করে অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান সাহেবের কাছে। সিংহের স্থলে যদি একটি বিশালকায় হাতি আগমন করত তবে মনে হয় হরিণ শাবকের জন্য কিছুটা স্বস্তিদায়ক হতো। নিশ্চয় বাংলাদেশের মানুষ চাইবে না যে ২১ আগস্টের পুনরাবৃত্তি ঘটুক, আপনারা তো অবশ্যই ২১ আগস্টের পুনরাবৃত্তি চাইবেন না।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের পথ সুগম করার চেয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করা কি শ্রেয় হবে? আগামী নির্বাচনে আপনাদের প্রত্যাশা কী? ক্ষমতার পালাবদল না জনগণের জন্য অর্থবহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা? যদি ক্ষমতার পালাবদলের মাধ্যমে ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করতে চান তবে আপনাদের আমার বলার কিছুই নেই। বরং আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

আর যদি অর্থবহ গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান তবে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সুরে সুর মিলিয়েই বলতে হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সমান দূরত্বে রেখে জাতীয় মহাঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নয়, মহাঐক্য গড়ে তোলেন।

যে ঐক্যের মধ্যে ভাগাভাগির কোনো শর্ত থাকবে না, থাকবে শুধু ’৭১-এর চেতনায় বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়। সেই মহাঐক্য হবে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ডান, বাম, শ্রমিক, জনতা এবং সব পেশার ও রাজনৈতিক সচেতন মানুষের এমনকি জামায়াতে ইসলামীও সেই মহাঐক্যে থাকতে পারে, যদি তারা ’৭১-এর ভূমিকার জন্য সহি তওবা করে এবং দেশের জনগণের কাছে ৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং দেশনেত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়ার টানাটানিতে অসুস্থ ও মৃতপ্রায়। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া একান্ত প্রয়োজন। জাতীয় মহাঐক্যের মাধ্যমেই এ অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব এবং আমি মনে করি জাতীয় মহাঐক্যের এখন সময়ের দাবি।

যদি আমরা দেশের জনগণের জন্য রাজনীতি করি তবে অবশ্যই জাতীয় মহাঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব এবং জাতীয় মহাঐক্যে অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অর্থবহ এবং গণতন্ত্র হবে সুপ্রতিষ্ঠিত।

সর্বশেষে দেশের জনগণের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কমনা করছি এবং জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের যাত্রা শুরু হোক এই আশাবাদ রেখে শেষ করলাম।

 

লেখক : সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সর্বশেষ খবর