শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পরিবহন ধর্মঘট

এ হঠকারিতার অবসান হোক

সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের প্রতিবাদে পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির যে পাঁয়তারা চালাচ্ছে তা শুধু অনাকাক্সিক্ষত নয়, ধৃষ্টতার শামিল। অনির্দিষ্টকালের জন্য তারা ধর্মঘটে নেমেছে সাত দফা দাবিতে। এ দাবিগুলোর মধ্যে আছে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ সংশোধন করা, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০২ ধারায় মামলা গ্রহণ না করা, ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান বাতিল ও জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা, টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য হাসমত আলীসহ মালিক ও শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া, পুলিশের হয়রানি বন্ধ, গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ট্রাক টার্মিনাল বা স্ট্যান্ড নির্মাণ ইত্যাদি। এ দাবি জানান দিতে গত শনিবার বিকালে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে ঐক্য পরিষদের সমাবেশ হয়েছিল। সমাবেশ থেকে সাত দফা দাবি আদায়ে ঢাকা বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পণ্য পরিবহন ধর্মঘট বা চালকদের কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়। পরদিন রবিবারই শুরু হয়েছে তাদের এ কর্মসূচি। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে প্রতিদিন তৈরি পোশাকবাহী যে ভারী যান চলাচল করে তার বেশির ভাগই চলেনি। ঢাকা বিভাগ ছাড়াও বগুড়াসহ উত্তরের বিভিন্ন জেলায় ভারী যানবাহন চলা বন্ধ রাখারও চেষ্টা চালাচ্ছেন ধর্মঘটীরা। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাস ও ট্রাক থামিয়ে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষার নামে হেনস্তা করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। কয়েকজন চালকের নাকে-মুখে পোড়া মবিল লেপে দেওয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছেন তারা। স্বীকার করতেই হবে, ধর্মঘট করা যে কোনো নাগরিকের অধিকার। দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দাবি আদায়ের জন্য পরিবহন শ্রমিকরা যে আন্দোলনে নেমেছেন তা হঠকারিতার শামিল। তাদের বেপরোয়া আচরণে মানুষের জীবন যাবে এবং মানুষ হত্যা করা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যাবে নাÑ এমন দাবি কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় যে পরিবহন আইন পাস করেছে তাতে কার্যত পরিবহন চালকদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। গায়ের জোরে তারা আইন বদলানোর যে দাবি জানাচ্ছেন  তা প্রত্যাখান করে সরকার সড়কশৃঙ্খলা রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর