বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ক্ষুধামুক্তির লড়াই

এগোচ্ছে বাংলাদেশ, আরও এগোতে হবে

ক্ষুধা দূর করার ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে। ১১৭টি দেশের মধ্যে এ বছর বাংলাদেশের স্থান ৮৬তম। সে ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ১০৩ আর পাকিস্তানের ১০৬ নম্বর। গত ১০ বছরে ক্ষুধা দূর করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে এগিয়েছে। প্রথম পাঁচ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি ছিল নজর কাড়ার মতো। তবে তার পরের পাঁচ বছরে ক্ষুধা দূর করার গতি কিছুটা স্তিমিত হয়েছে। মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পর বাংলাদেশ অনাকাক্সিক্ষত কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ১০ লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করত হচ্ছে বাংলাদেশকে। তারা এমন একসময় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে যখন বন্যায় ব্যাপক ফসলহানির সম্মুখীন হয় বাংলাদেশ। গত বছরের এ ধকল সত্ত্বেও ক্ষুধামুক্তির লড়াইয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বা পঞ্চম অর্থনৈতিক শক্তি ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এ ক্ষেত্রে ভারত বরং পিছিয়েছে। ২০১৬ সালে প্রতিবেশী এ দেশটির অবস্থান ছিল ৯৭তম। এ বছর ৫ ধাপ নিচে নেমেছে তারা। ক্ষুধামুক্তিতে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করলেও বাংলাদেশে এখনো ৩৬ লাখ মানুষ মারাত্মক ক্ষুধাঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সোজা কথায় শতকরা ২ ভাগ মানুষ ক্ষুধাঝুঁকির শিকার। বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্তির সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করলেও বিশ্বের ৮৫টি দেশের অবস্থা বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশ অবশ্য ঐতিহ্যগতভাবে ক্ষুধাঝুঁকির দেশ। গত দুই দশকে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে। ব্রিটিশ আমলে ঘটেছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। পাকিস্তান আমলের সিকি শতাব্দী বাংলাদেশকে দুর্ভিক্ষ ও মঙ্গার শিকার হতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর ১৯৯৫-এর আগ পর্যন্ত এটি ছিল নিয়তির লিখন। তারপর পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ক্ষুধার ঝুঁকি বেড়ে যায় হঠাৎ করে। ক্ষুধামুক্তির সংগ্রামে গত এক দশক ২০০ বছরের মধ্যে সেরা হলেও এতে সন্তুষ্ট হওয়ার অবকাশ নেই। দেশের ৩৬ লাখ মানুষ যেহেতু ক্ষুধাঝুঁকির মধ্যে সেহেতু এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে আমাদের যতœবান হতে হবে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অপুষ্টির অভিশাপকে ডাস্টবিনে ফেলতে আরও কঠিন লড়াই চালাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর