শনিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ের চা চাষ

অযুত সম্ভাবনার হাতছানি

দেশের উত্তর প্রান্তের জেলা পঞ্চগড় চায়ের নতুন রাজ্যে পরিণত হচ্ছে। মাত্র দেড় যুগের ব্যবধানে এ জেলা দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চা উৎপাদক এলাকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দারিদ্র্যপীড়িত এ জেলায় দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখছে চা চাষ। দুটি পাতা একটি কুঁড়ি পঞ্চগড়ের বিপুলসংখ্যক অভাবী মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। বাড়ির আঙিনা কিংবা পতিত জমিতে চা চাষ করে তারা নিজেদের ভাগ্য বদলের সুযোগ পেয়েছে। চা চাষ এ জেলার কয়েক হাজার মানুষের জীবিকায় পরিণত হয়েছে। একসময় বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের তৃতীয় স্থানে ছিল যে চা, কালের বিবর্তনে তা এখন আমদানিপণ্যে পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে অবদান রাখছে পঞ্চগড়ের চা। নব্বইয়ের দশকে এ জেলায় প্রথম ক্ষুদ্র পরিসরে সমতলে চা চাষ শুরু হলেও তা এখন ভিটেমাটি থেকে বাড়ির আনাচ-কানাচ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। একসময়ের পতিত গোচারণভূমি ও অনুন্নত জেলা পঞ্চগড় এখন সবুজ চা বাগানে ভরে উঠেছে। এ চা যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারেও। প্রক্রিয়াজাত কারখানাগুলোয় হচ্ছে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান। হাজার হাজার নারী শ্রমিক চা বাগানে বিভিন্ন কাজ করে উপার্জন করছেন। নব্বইয়ের দশকে প্রথমে টবে, পরে পতিত জমিতে চা বাগান করা শুরু করে পঞ্চগড়ের মানুষ। তবে ২০০১ সালে বেশ কয়েকটি কোম্পানি সেখানে চা চাষ শুরু করলে বাণিজ্যিক চা বাগানের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। পঞ্চগড়ে ২০১৪ সালে সবুজ চা পাতা উৎপাদিত হয়েছে ৬৩ লাখ ২৭ হাজার ৪২৭ কেজি। ২০১৭ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৯ কেজিতে। চলতি বছর উৎপাদন গত বছরকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্মর্তব্য, ২০১৭ সালে এ জেলায় লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ চা উৎপাদিত হয়েছে। নতুন-পুরান ১২টি চা কারখানা থেকে ৫৪ লাখ ৪৬ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। পঞ্চগড়ে চা চাষ হচ্ছে ব্যক্তি উদ্যোগে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ জেলায় চা উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে ব্যাপকহারে বাজার সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে পঞ্চগড়ের চায়ের। সেজন্য সরকারকে সহায়তার হাত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর