বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দূষণে ধুঁকছে জলাশয়

কর্তৃপক্ষের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

অব্যবস্থাপনার কারণে রাজধানীর সৌন্দর্যবর্ধনকারী লেকগুলো ভয়াবহ দূষণের শিকার হয়ে বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প হাতিরঝিল লেকটির দূষণ নিয়ন্ত্রণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও তা কোনো কাজে লাগছে না এ লেকে মানুষের বাসাবাড়ির বর্জ্য, মলমূত্র, খাবারের প্যাকেট ও উচ্ছিষ্ট এবং যথেচ্ছভাবে প্লাস্টিক, পলিথিনসহ ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য। বিশুদ্ধ বায়ু সেবনের জন্য যারা হাতিরঝিলে যাচ্ছেন তারা বিব্রত বোধ করছেন লেকের পানির বিকট দুর্গন্ধে। প্রসঙ্গত, হাতিরঝিলের দূষণ নিয়ে দেশের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গবেষণা করেছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, হাতিরঝিলের পানিতে নানা ধরনের জীবাণুর অস্তিত্ব রয়েছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। মূলত সুয়ারেজের দূষিত পানি ঝিলের পানিতে মিশে যাচ্ছে বলেই পানিতে প্রচুর জীবাণুু পাওয়া যাচ্ছে। হাতিরঝিলের পানিতে রয়েছে প্রচুর কার্বন ডাইঅক্সাইড। এখানকার প্রতি লিটার পানিতে ৩৫ থেকে ৬০ মিলিগ্রাম কার্বন ডাইঅক্সাইড আছে। অথচ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পানিতে কার্বন ডাইঅক্সাইড থাকতে হবে প্রতি লিটারে ৪ গ্রাম মাত্র। শুধু হাতিরঝিল নয়, ধানমন্ডি, গুলশান, উত্তরা ও ক্রিসেন্ট লেকের অবস্থাও দাঁড়িয়েছে অভিন্ন। লেকের পাড়ে দাঁড়িয়ে বিশুদ্ধ বায়ু সেবনের বদলে দুর্গন্ধে মানসিক অসুস্থতার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। হাতিরঝিলের পানি শোধনের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করা হলেও বর্জ্য, প্ল­াস্টিক ও পলিথিন ফেলা বন্ধ না হওয়ায় তা শুধু সরকারি অর্থের অপচয় ঘটাচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন লেক ও জলাশয় সুরক্ষায় সরকার ও সিটি করপোরেশনকে কঠোর হতে হবে। বিশেষ করে হাতিরঝিলে অপরিকল্পিতভাবে যেসব রেস্টুরেন্ট বা খাবার দোকান গড়ে উঠেছে তা বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। দর্শনার্থীরা যাতে হাতিরঝিল দূষণে ভূমিকা না রাখে তা নিশ্চিত করতে নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়াও জরুরি। লেকগুলোয় যাতে সুয়ারেজের দূষিত পানি কোনোভাবে না পড়ে সে বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে নজরদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুম্ভকর্ণের ঘুম ভেঙে উঠতে হবে। তাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর