বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভয়াবহ গ্যাস সংকট

সংকট মোচনের উদ্যোগ নিন

জ্বালানি গ্যাস সংকটে ভুগছে সারা দেশ। সরবরাহ শুরুর আড়াই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এলএনজির পাইপলাইনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ঘটেছে এই অপ্রত্যাশিত বিপর্যয়। মহেশখালীর ভাসমান টার্মিনাল থেকে তরল গ্যাসের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় শিল্পকারখানার উৎপাদন থমকে দাঁড়িয়েছে। গ্যাসের সংকটে সিএনজি স্টেশন থেকে যানবাহনে গ্যাস পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ছে। বাসাবাড়ির গ্যাস সরবরাহেও সৃষ্টি হয়েছে বাড়তি সংকট। রাজধানীর অধিকাংশ স্থানে চুলা ঠিকমতো জ্বলছে না। শিল্পকারখানায়ও চলছে একই সংকট। পাইপলাইনের ত্রুটির কারণে নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় চার মাস পর এলএনজির সরবরাহ শুরু হয়। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাইপলাইনে ত্রুটি ধরা পড়ে। পানির প্রায় ৪০ মিটার নিচে অবস্থিত পাইপলাইনের ইমারজেন্সি বাল্বের হাইড্রোলিক সুইচে সমস্যা দেখা দেয়। পেট্রোবাংলা-সংশ্লি­ষ্টরা বলছেন, বাল্বটি মেরামতের চেষ্টা চলছে। আশা করা হচ্ছে, দু-এক দিনের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে। বাল্বটি পরিবর্তন করতে হলে বিদেশ থেকে আনতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ। তেমনটি হলে এলএনজি সরবরাহ শুরু হতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ লাগবে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর বরাত দিয়ে সহযোগী দৈনিকে বলা হয়েছে, গত দুই দিনে বিদ্যুতে প্রায় ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমেছে। গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার শিল্পকারখানায় গ্যাস সংকট তীব্র হয়েছে। ঢাকার বাসাবাড়িতেও গত রবিবার থেকে চরম গ্যাস সমস্যা চলছে। ভয়াবহ জ্বালানি ঘাটতি মেটাতে ২০১০ সালে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। দীর্ঘ আট বছরের প্রচেষ্টার পর গত ২৪ এপ্রিল এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টার্মিনালটি কাতার থেকে এলএনজি নিয়ে বাংলাদেশে আসে। এরপর চার দফা সরবরাহ শুরুর তারিখ দেওয়া হলেও পাইপলাইনে ত্র“টির কারণে তা সম্ভব হয়নি। সবশেষে গত ১৮ আগস্ট এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়। দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট সরবরাহের সক্ষমতা থাকলেও পাইপলাইন সীমাবদ্ধতার কারণে সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছিল। সমুদ্র তলদেশে স্থাপিত পাইপলাইনের ত্রুটির কারণে যে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে তা দেশের অর্থনীতির জন্য যেমন দুঃসংবাদ বলে বিবেচিত হচ্ছে, তেমন কেড়ে নিয়েছে জনমনের স্বস্তি। আমরা আশা করব, গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পেট্রোবাংলা সাধ্যানুযায়ী সব চেষ্টা চালাবে। এ ধরনের বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর