রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মহান বিজয় দিবস

ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবের দিন

বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবময় দিন মহান বিজয় দিবস আজ। জাতি এ বছর মুক্তিযুদ্ধের গৌরবদীপ্ত বিজয়ের ৪৭তম বার্ষিকী পালন করছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়। পাকিস্তানি হানাদারদের আত্মসমর্পণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আপন স্বকীয়তায় মূর্তমান হয়। হাজার হাজার বছর আগেও গাঙ্গেয় বদ্বীপের অধিবাসীদের বীর জাতি হিসেবে সমীহ করা হতো। মহাবীর আলেকজান্ডারের সঙ্গীরা এ ভূখণ্ডের অধিবাসীদের শৌর্যবীর্যের প্রশংসা করেছেন। আড়াই হাজার বছর আগে রোমান কবি ভার্জিলের কবিতায় বাঙালির বীরবন্দনা প্রকাশ পেয়েছে। তার পরও বলা যায়, ধনধান্যে পুষ্পে ভরা এ ভূখণ্ডের মানুষের ইতিহাস খুব একটা সুখকর নয়। এ দেশের সম্পদ লুণ্ঠনে বিদেশি হানাদাররা বারবার আঘাত হেনেছে। একপর্যায়ে বাঙালি তার স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলে ইংরেজ বণিকদের হাতে। বাঙালি মুসলমানদের অগ্রণী ভূমিকায় ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও শুরুতেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয় এ দেশের মানুষ। নতুন রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব চলে যায় সংখ্যালঘিষ্ঠ পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। বাঙালিরা শোষণ ও নির্যাতনের শিকারে পরিণত হয়। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান বাঙালির সাহসী নেতা বঙ্গবন্ধু। ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হলে পাকিস্তানিরা তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে তারা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংসতম গণহত্যা। এ প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তার নির্দেশেই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। একটি সুখী-সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা। বিগত প্রায় চার যুগের বিশেষত গত এক দশকে দেশ অনেক এগিয়ে গেলেও কাক্সিক্ষত সেই লক্ষ্য পূরণে জাতিকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্থহীন। রক্ত দিয়ে কেনা বিজয়কে অর্থবহ করে তুলতে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও দেশকে দ্রুত এগিয়ে নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর