বৃহস্পতিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর আরবের বিভিন্ন গোত্রের বিদ্রোহ ও ভণ্ডনবীদের উসকানিমূলক কার্যকলাপ ইসলামকে এক বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। স্বধর্মত্যাগ আন্দোলন ছিল ইসলামের প্রতি এক বিরাট হুমকিস্বরূপ। মূলত এটা ছিল পুরনো পৌত্তলিক ধর্মে ফিরে যাওয়ার আন্দোলন। ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেন, ‘সমগ্র উপদ্বীপে আরবরা স্বধর্মে ফিরে যাচ্ছিল।’ সমগ্র আরবে তখন ধর্মত্যাগের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। ইসলাম ও শিশু ইসলামী রাষ্ট্রের অস্তিত্ব তখন বিপদাপন্ন। এ সময় হজরত আবুবকর (রা.) যদি শক্ত হাতে ইসলামের হাল না ধরতেন তাহলে এটা ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু যে নবী ছিল তাঁর শক্তি ও সাহস তিনি আজ আর ইহজগতে নেই। হজরত আবুবকর (রা.) জানতেন, ‘মানুুষ মরণশীল, কিন্তু আল্লাহ চিরঞ্জীব।’ সুতরাং চিরঞ্জীব ‘আল্লাহ মনোনীত দীন ইসলাম’ মহানবীর অবর্তমানে নির্বাণ লাভ করতে পারে না। এ দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে তিনি ইসলামকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ভণ্ডনবীদের ধ্বংস ও বিদ্রোহীদের দমন করতে না পারলে ইসলামকে রক্ষা করা যাবে না এবং আরবে ইসলামকে রক্ষা করতে না পারলে বাইরে ইসলাম প্রচার করা সম্ভব নয়। কাজেই ইসলামকে বাইরে প্রচার করার আগে আরবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সম্পর্কে অধ্যাপক হিট্টি বলেন, ‘বিশ্বজয়ের আগে আরববাসীকে সর্বপ্রথম আরব দেশকে জয় করতে হয়েছিল।’ তাই ইসলামকে রক্ষা করার জন্য হজরত আবুবকর (রা.) ওসামার সৈন্যবাহিনী ও অন্য মুসলমানদের ধর্মত্যাগী ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করার জন্য ধুলকাশাতে সমবেত হতে আহ্বান জানালেন। তিনি তাদের ১১টি সৈন্যদলে ভাগ করলেন এবং প্রতিটি সৈন্যদলকে একজন অভিজ্ঞ সেনাপতির অধীনে আরবের বিভিন্ন অংশে পাঠালেন।

খালিদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে প্রথমে তুলায়হা ও পরে মালিক বিন নুবায়বার বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরিত হলো। আবু জাহেলের ছেলে ইকরামাকে মুসায়লামার বিরুদ্ধে পাঠানো হলো। ইকরামাকে সাহায্য করার জন্য শুরাহবিলকে অতিরিক্ত সৈন্যসহ পাঠানো হলো। মুহাজির বিন আবি উমাইয়াকে ইয়েমেন ও হাজরামাউত আক্রমণ করতে পাঠানো হলো। সিরিয়ার সীমান্ত পাহারা দেওয়ার জন্য একদল সৈন্য এবং আম্মান ও মাহরাতে বিদ্রোহ দমনের জন্য দুই দল সৈন্য পাঠানো হলো। বুজাহ গোত্রের শক্তি খর্ব করার জন্য একদল এবং বানু সালমা ও হাওয়াজিন গোত্র দমন করার জন্য অন্য একদল সৈন্য পাঠানো হলো।              

শাকিলা জাহান

সর্বশেষ খবর